আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সচিবালয়ে সংগঠিত হচ্ছেন দীর্ঘদিন বঞ্চিত থাকা সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীরা।
সচিবালয় খুলে দিলে সকাল থেকেই বঞ্চিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সচিবালয়ে প্রবেশ করতে থাকেন। তাদের বিভিন্ন স্থানে জটলা করে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে দেখা যায়।
সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের লাইব্রেরি কক্ষে তারা সভাও করেছেন।
তারা বলছেন, আমরা দীর্ঘদিন বঞ্চিত হয়েছি, বৈষম্যের শিকার হয়েছি। এখন বৈষম্যবিরোধী একটি আন্দোলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে। আমরা আমাদের ন্যায্য অধিকার পেতে চাই।বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির দিনে সোমবার (৫ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন। সংবিধান অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ করার পর অন্যমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা ত্যাগ করেছেন বলে গণ্য হবে।সভায় পদোন্নতি বঞ্চিত কর্মকর্তারা বলেন, আপনারা অনেকেই দালালি করেছেন। সরকারি এমপি মন্ত্রীদের পিছু পিছু ঘুরেছেন। আজকের এই আলোচনায় এমন সুবিধাভোগী কোনো কর্মকর্তা কর্মচারী থাকলে বের হয়ে যান। যদি এমন কেউ থাকেন তাহলে আপনার বিবেককে প্রশ্ন করেন এই ১৫ বছরে আপনারা কি করেছেন। বিবেকের কাছে প্রশ্ন করে এমন কর্মকর্তারা বের হয়ে যান। তা না হলে আপনাদের কিছু হয়ে গেলে সে দায় আমরা নেব না।
তারা আরও বলেন, আমরা এতদিন পদোন্নতি বঞ্চিত ছিলাম। অনেক মেধাবী কর্মকর্তাদের ইচ্ছাকৃতভাবে চাপিয়ে রাখা হয়েছে। অবিচার করা হয়েছে।
তারা বলেন, সচিবালয়ে কোনো কর্মকর্তার আদেশ মানা হবে না। আদেশ করতে হলে আমাদের অবগত করে করতে হবে।
পরে ১৯৮৪ ব্যাচের কর্মকর্তা নেয়ামত উল্লাহ ভুইয়া সাংবাদিকদের বলেন, আমি পদোন্নতি বঞ্চিত হয়েছি, নিগৃহীত হয়েছি। আমার নামে মামলা দেওয়া হয়েছে। আমার মতো অনেকে আছেন তারা গত ১৫ বছর ধরে ওএসডি। আমাদের কোনো পদোন্নতি দেওয়া হয়নি। আমরা এখন সব বঞ্চনার নিরসন চাই। যেহেতু শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনটা হচ্ছে বৈষম্য দূর করার আন্দোলন।
তিনি বলেন, আমরা এখন শৃঙ্খলার সঙ্গে রাষ্ট্র মেরামতের কাজ করতে চাই। আজকে আমরা আমাদের মধ্যে মতবিনিময় করেছি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আব্দুর রব বলেন, ১৬ বছর ধরে আমাদের বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। কোনো পদায়ন করা হয়নি। আমরা আমাদের ন্যায্যতা পেতে চাই।
আরেক কর্মকর্তা আবু রায়হান বলেন, আমার বাড়ি বগুড়ায় হওয়ায় আমাকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পোস্টিং দিয়েছে। আমার বাড়ি বগুড়া এটাই আমার অপরাধ। ওএসডি করে রাখা হয়েছে, পদোন্নতি পর্যন্ত আমাকে দেওয়া হয়নি।লাইব্রেরিতে সভা করার সময় কয়েকজন বঙ্গবন্ধুর ছবি খুলে ফেলার চেষ্টা করেন। এতে কয়েকজন বাধা দিলে অন্যরা তা করতে পারেননি।