ঝিনাইদহের মহেশপুরে ড্রাগন চাষি জাহাঙ্গীর আলম মিলনের ২ হাজার ৬০০ ড্রাগন ফলের গাছ কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। রোববার (১২ মে ) মধ্যরাতে খালিশপুর ইউসুফ ফিলিং স্টেশনের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
জাহাঙ্গীর আলম মিলন কোটচাঁদপুর উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের আব্দুর সাত্তারের বড় ছেলে। এ ঘটনায় তিনি মহেশপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালে মহেশপুর উপজেলার খালিশপুর বাজারের ইউসুফ ফিলিং স্টেশনের পূর্ব পাশে ৪০ শতক জমিতে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয় করে ড্রাগন ফলের বাগান করেন মিলন। দীর্ঘ ১ বছর ধরে পরিচর্যা করে এখন ড্রাগন গাছে ফুল এসেছে। সব মিলিয়ে বাগানে ৫ লাখ টাকার বেশি খরচ করেছেন তিনি। রোববার রাতে শত্রুতাবশত কে বা কারা ড্রাগন ফলের গাছ কেটে দিয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কোটচাঁদপুর-মহেশপুর সড়কের ইউসুফ ফিলিং স্টেশনের পাশে ড্রাগন ফলের বাগান। বাগানে ঢুকতেই দেখা যায় প্রতিটা ড্রাগন ফলের গাছ মাটি থেকে ৬/৭ ইঞ্চি উঁচু করে কাটা হয়েছে। গাছের মূলে ছোট ছোট ড্রাগন ফুল এসেছে। প্রচণ্ড রোদে কাটা গাছ গুলো শুকিয়ে গেছে। একটু ক্ষতি পুষিয়ে নিতে, ক্ষেতের এক পাশ থেকে শুকনো গাছগুলো নতুন করে লাগানো হচ্ছে।
প্রতিবেশী কৃষক বরকত উল্লাহ ঢাকা পোস্টকে জানান, রাতের অন্ধকারে কে বা কারা এই ড্রাগন ফলের গাছ কেটে দিয়েছে। সকালে মাঠে এসে দেখি সারি সারি গাছ গোড়া থেকে কেটে ফেলা হয়েছে। এখন গাছে ফল ধরার সময় হয়েছে। কেউ শত্রুতা করে সব ড্রাগন গাছে কেটে দিয়েছে।
ড্রাগন চাষি জাহাঙ্গীর আলম মিলন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি একজন আইনজীবী। বাবা কৃষক ছিলেন। যার কারণে আগ্রহ নিয়েই আমি এই ড্রাগন ফলের বাগান করেছিলাম। সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। গাছে গাছে ফুল এসেছিল। কিন্তু কে বা কারা শত্রুতা করে বাগানের সব ড্রাগন ফলের গাছ কেটে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ৪১ শতক জমিতে ২ হাজার ৬০০ ড্রাগন গাছ ছিল। জমি প্রস্তুতিসহ এ পর্যন্ত ৫ লাখ টাকার বেশি খরচ হয়েছে। কৃষি অফিস থেকে দুই জন লোক এসেছিল। তারা দেখে চলে গেছে। মহেশপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এখনো পর্যন্ত কেউ খোঁজ নেয়নি। প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, যারা এ কাজ করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
মহেশপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইয়াসমিন সুলতানা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ড্রাগন ফলের বাগান কাটার বিষয়টি জানতে পেরে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে বাগান পরিদর্শন করতে পাঠানো হয়েছে। ড্রাগন চাষির পক্ষ থেকে সাহায্যের জন্য এখনো কোনো অভিযোগ বা আবেদন পাইনি। তার পরও আমাদের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক যাতে ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারেন সে ব্যাপারে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
মহেশপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুবুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, মিলন একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।