চাঁদপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের সার্ভেয়ার মোঃ আলাউদ্দিন বলেন বাবুরহাট বাজারে জেলা পরিষদ তাদের সম্পত্তি দাবি করে সড়ক ও জনপদের সম্পত্তিতে উচ্ছেদ অভিযান করাটা ছিল অযৌক্তিক। জেলা পরিষদ কিসের বলে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছে তা সড়ক ও জনপদ বিভাগের জানা নেই। কিন্তু এই সম্পত্তি আশিকাটি মৌজার বি এস ৪ নং খতিয়ানে বি এস ১২৫১ দাগে ১ একর ৪০ শতাংশ জনয়জুলি শ্রেণীর মালিক সড়ক ও জনপদ বিভাগ চাঁদপুরের। ১০ অক্টোবর সকালে সড়ক ও জনপদ বিভাগ এবং মালিকানা সম্পত্তির মধ্যে সীমানা নির্ধারন শেষে সাংবাদিকদের এ সব কথা বলেন সার্ভেয়ার আলাউদ্দিন।
তিনি আরো বলেন বি এস ১২৫১ দাগ হতে বিবিধ রেকর্ড সংশোধন মোকদ্দমা ১১৪/২০-২১ মূলে ০.০৫৭৫ একর ২৭০৬ নং খতিয়ান এবং বিজ্ঞ ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল মোকদ্দমা আদেশের প্রেক্ষিতে বিবিধ রেকর্ড সংশোধন মোকদ্দমা ৩৪৭/২০১৭-১৮ এর ২৬/০৬/২০১৮ ইং তারিখে ০.১৯২৭ একর সহ মোট. ২৫.০২ একর সম্পত্তির মালিন হন মোঃ কবির হোসেন মিজি। তার নামে ২৩১৬ নং খারিজী খতিয়ান সৃজিত হয়। তার মালিকা সম্পত্তি এবং সড়ক ও জনপদ বিভাগের সম্পত্তির মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে জেলা প্রশাসকের ১২৯৯ নং স্মরকের আলোকে এস এ শাখার সার্ভেয়ার মোহাম্মদ আবদুর রহিম, জেলা পরিষদের সার্ভেয়ার নাছির উদ্দীন ও স্থানীয় নিরপেক্ষ সার্ভেয়ারের উপস্থিতে বি এস ও বি এস নক্সশা অনুয়ায়ী আমরা সীমানা নির্ধারন করি।
চলতি বছরের ২৯ জুন শনিবার চাঁদপুর জেলা পরিষদ তাদের নিজস্ব সম্পত্তি দাবি করে সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত বাবুরহাট বাজারে উচ্ছেদ অভিযান করেন। তখন তারা ৮৫ টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও একটি ভ্রবনের আংশিক উচ্ছেদ করেন।
জেলা পরিষদের উচ্ছেদ করা ১২৫১ দাগে মালিককৃত ভোক্তভোগী মোঃ কবির হোসেন মিজি জেলা প্রশাসকের বরাবার সীমান নির্ধারননের জন্য একটি আবেদন করেন। আবদনের প্রক্ষিতে ১১৬৭ নং স্বারকে সহাকারী কমিশনার ভুমি চাঁদপুর সদর এর সার্ভেয়ার আর্যনন্দ ১১ অক্টোবর একটি মতামত দেন। সে খানে তিনি উল্লেখ করেন কাগজপত্রে দেখা যায়- বি. এস ১২৫১ নং দাগে নয়নজুলি শ্রেণী হিসেবে ষোল আনা সম্পত্তিসহ বিভিন্ন দাগ মিলে মোট ২৭.১৯ একর ভূমি সড়ক ও জনপথ বিভাগ এর নামে ৪ নং খতিয়ান রেকর্ড প্রকাশিত হয়। উক্ত ১২৫১ দাগ হতে বিবিধ রেকর্ড সংশোধন মোকদ্দমা ১১৪/২০-২১ মূলে ০.০৫৭৫ একর ২৭০৬ নং খতিয়ান এবং বিজ্ঞ ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল মোকদ্দমা আদেশের প্রেক্ষিতে বিবিধ রেকর্ড সংশোধন মোকদ্দমা ৩৪৭/২০১৭-১৮ এর ২৬/০৬/২০১৮ ইং তারিখে ০.১৯২৭ একর মোঃ কবির হোসেন মিজি এর নামে ২৩১৬ নং খারিজী খতিয়ান সৃজিত হয় এবং ১৪৩০ বাংলা সন পর্যন্ত ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করেন।
১২৯৯ নং স্মারকে ২৪ সেপ্টেম্বর রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর অমৃত দেবনাথ স্বাক্ষরিত একটি নোটিশে উল্লেখ করেন সহকারী কমিশনার ভুমি চাঁদপুর সদর এর সার্ভেয়ারের প্রতিবেদনের আলোকে উক্ত নালিশী সম্পত্তি পরিমাণের লক্ষ্যে বি.এস রেকডীয় মালিক, সড়ক বিভাগের সার্ভেয়ার ও এস.এ শাখার সার্ভেয়ার কর্তৃক যৌথভাবে পরিমাপ করা যেতে পারে মর্মে মতামত ব্যক্ত করা হয়। জেলা পরিষদের ১ জন প্রতিনিধির উপস্থিতিতে যৌথভাবে পরিমাপ করে বিস্তারিত প্রতিবেদন আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে এ কার্যালয়ে প্রেরণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়।
তার প্রেক্ষিতে সড়ক ও জনপদ বিভাগের সম্পত্তি এবং কবির হোসেন মিজি’র মালিকানা সম্পত্তি র মধ্যে সীমানা নির্ধারনের জন্য ১০ অক্টোবর সকাল ৯:৩০ ঘটিকায় সরজমিনে আসেন এস এ শাখার সার্ভেয়ার মোহাম্মদ আবদুর রহিম, সড়ক ও জনপদ বিভাগের সার্ভেয়ার আলাউদ্দিন। জেলা পরিষদের প্রতিনিধী সার্ভেয়ার নাসির উদ্দীন উপস্থিত হন সকাল ১১:৩০ ঘটিকায়। জেলা পরিষদের দুর্বলতা ফাঁস হওয়ার ভয়ে মালিকা সম্পত্তি এবং সড়ক ও জনপদের সম্পত্তির সীমানা নির্ধারন যাতে না করতে পারে সে লক্ষ্যে সার্ভেয়ার নাছির উদ্দীন এসেই এস এ শাখার সার্ভেয়ার মোহাম্মদ আবদুর রহিম এর সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। যুক্তি তর্কে হেরে গিয়ে শেষ পর্যন্ত সার্ভেয়ার নাছিরের উপস্থিতিতে মালিকা সম্পত্তি ও সড়ক বিভাগের সম্পত্তিতে সীমানা নির্ধারন করা হয়। সীমানা নির্ধানরের পর দেখা যায় যে জেলা পরিষদের ভাঙ্গা মালিকানা সম্পত্তির উপর নির্মিন রাফি প্লাজা ভ্রবনটি তার নিজস্ব সম্পত্তিতে ছিল। জেলা পরিষদের কিছু অসাধু কর্মকর্তা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নিয়ম বহিভূতভাবে বিনা নোটিশে উচ্ছেদ করেন।
এস এ শাখার সার্ভেয়ার মোহাম্মদ আবদুর রহিম সাংবাদিকদের বলেন ১২৫১ দাগের পশ্চিম অংশে ১০৯১/২০২০ মহামান্য হাইকোর্টের রিট ও নিষেধাজ্ঞা চলমান রয়েছে এবং সি এস ১৯১ নং খতিয়ানে নাল ৬৩৩ দাগে , সি এস ও বি এস ম্যাপ অনুয়ায়ী খাল ও চলাচলের রাস্তা ৬৩৫ দাগে মহামান্য হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞাও চলমান রয়েছে। আইনগত জটিলতা এড়াতে উচ্ছেদ পরিচালনার পূর্বে দাগন্বয়ের মধ্যে সরেজমিন সুস্পষ্ট সীমানা নির্ধারণ করা প্রয়োজন হলে জেলা প্রশাসক সীমানা নির্ধারন করে দিয়েছে।১২৫১ দাগ ও ২১৭ দাগে জেলা প্রশাসক উচ্ছেদের অনুমতি দেয়নি। আমরা আজ সড়ক ও জনপদ বিভাগের এবং মালিকানা সম্পত্তির সীমানা নির্ধারন করেছি।
নিরপেক্ষ সার্ভেয়ার চাঁদপুর সিভিল কোর্ট কমিশনার মোঃ হুমায়ুন বলেন কবির হোসেন মিজি তার মালিকানা সম্পত্তিতে ভ্রবন নির্মান করেন। তার ভ্রবনটি জেলা পরিষদ কোন মতেই ভাঙ্গতে পারেনা। তার সাথে অন্যায় করা হয়েছে।
ভুত্তভোগী কবির হোসেন মিজি বলেন জেলা পরিষদ অসৎ উদ্দেশ্যে মোটা অংকের টাকা খেয়ে, কিছু কূচক্রী মানুষের দ্বারা প্রবাহিত হয়ে আমার ভ্রবনটি ভেঙ্গে আমাকে মারাত্মক ক্ষতি গ্রস্থ করে। তাছাড়া এই সম্পত্তির মালিক জেলা পরিষদ না। জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী ও সার্ভেয়ার আমার ৩০ কোটি টাকার ক্ষতি করেছে। আমি এর বিচার চাই।