চাঁদপুর শহরের প্রবেশদ্বার বাবুরহাটে সড়ক ও জনপদের মতলব পেন্নাই সড়ক। সড়কটি শহরের একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হলেও স্থানীয় কিছু অসাধু ব্যক্তির বাণিজ্যের কারণে রাস্তার পাশ দখলের প্রতিযোগিতা চলছে, ফলে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে পথচারীরা, ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রী সাধারণদের।
পৌরসভার নির্দিষ্ট কোন স্ট্যান্ড না থাকায়, রাস্তার পাশ দখল হওয়াতে সি এন জি, অটো, রিক্সা বাধ্য হয়ে রাস্তার উপর স্ট্যান্ড করে রাখতে হচ্ছে। রাস্তায় গাড়ি থামিয়েই যাত্রী উঠানামা করাতে হচ্ছে। আর এতে করে সড়কের যানবাহন চলাচলের রাস্তাটি আরো সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে, ফলে সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট। ঘটে যাচ্ছে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা।
মতলব পেন্নাই সড়কটি দিয়ে চাঁদপুর থেকে ঢাকা আসা-যাওয়া করা যে কারো জন্য সহজ ও কম সময়ের ব্যাপার। তাই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভারদের একমাত্র পচন্দের রাস্তা হলো এটি।
চাঁদপুর অ্যাম্বুলেন্স মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি মোঃ মাসুদ হোসেন বলেন চাঁদপুর থেকে অনেক মুমূর্ষু রোগীদের দ্রুত উন্নত চিকিৎসা করার জন্য আমাদের ঢাকা নিতে হয়। তাই আমরা দ্রুত ঢাকা যাওয়ার জন্য মতলব পেন্নাই সড়কটি ব্যবহার করি।কিন্তু বাবুরহাটের যানজটের কারনে অনেক সময় আমাদের এখানেই এক ঘন্টা, আধা ঘন্টা যানজটে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে। রোগী নিয়ে এক ঘন্টা অথবা আর্ধা ঘন্টা পরে ঢাকা পৌছতে হচ্ছে। এতে করে রোগীর অবস্থা অনেক সময় আরো খারাপ হয়ে যায়। আমরা প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করি। ফুটপাত দখলমুক্ত হলে যানজট কিছুটা কমবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
জানা যায় মতলব পেন্নাই সড়ক ও মসজিদ রোডের মাথায় স্থানীয় দুদু মাল ও বাবুল মাল সড়ক ও জনপদের জায়গা দখল করে টং দোকান, চায়ের দোকান, পানের দোকান করে ভাড়া দেন, আর মাস শেষে হাজার হাজার টাকা নিয়ে যাচ্ছেন। রিক্সার ড্রাইভারদের মাইরধোর করে তাদের রিক্সার স্ট্যান্ড সরিয়ে দুদু মাল ও বাবুল মাল ঢং দোকান, পানের দোকান, চায়ের দোকা, মুচিকে বসিয়ে ভাড়া দেন।
দুদু মাল থেকে ভাড়া নেওয়া বিল্লাহ শেখ নামে এক পান ব্যবসায়ী বলেন আমি এই অল্প জায়গাটুক পান বিক্রি করার জন্য দুদু মাল থেকে ভাড়া নিয়েছি। আগে আমি প্রতি মাসে দুই হাজার টাকা করে ভাড়া দিতাম, এই জানুয়ারী মাস থেকে আড়াই হাজার টাকা করে দিতে হবে বলে ধার্য্য করে দিয়েছে দুদু মাল। আমরা যারা এখানে বসেছি প্রত্যেকেই মাসে মাসে ভাড়া দিতে হচ্ছে তাদের।
বাবুরহাটের নূর হোসেন, কালাম, মন্নান খান, টেলু, জয়নাল হাওলাদার, চান্দু, শফিক, সহ প্রায় ৪০জন রিক্সার ড্রাইভার বলেন আমরা স্বাধীনতার পর থেকে এই জায়গায় রিক্সা রাখতাম, এই খানে একটা ব্রীজ ছিল আমরা ব্রীজের পাশেই আমাদের রিক্সা রাখতাম। দুদু মাল, বাবুল মাল আমাদের অনেকে মাইরধোর করে সরকারি জায়গা দখল করে ভাড়া দিচ্ছে। আমরা বাধ্য হয়ে রাস্তায় রিক্সা রেখে যাত্রীদের উঠানামা করতে হয়। রাস্তার মুখে তাদের দোকান ও আমাদের রিক্সার কারনে যানজটের সৃষ্টি হয়। পেটের দায়ে আমরা রিক্সা নিয়ে রাস্তায় নামি। আমাদের বিশ্বাস সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে আমরা আমাদের রিক্সার স্ট্যান্ডটি আবার ফিরে পাবো।
এছাড়াও মতলব পেন্নাই সড়কের দু পাশে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীরা যে যার মত করে সরকারি জায়গা দখল করে ভাড়া দিচ্ছে।
এই বিষয়ে বাবুরহাট বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোঃ দেলোয়ার হোসেন খান বলেন আমি চাই আমাদের বাজারটি নিয়মনীতির মধ্যে চলোক। যারা এই জায়গা দখল করে যারা ভাড়া দিচ্ছে তারা স্থানীয়, সরকার তাদের থেকেই জমি নিয়েছে, তাই তারা প্রভাব খাটায়। সি এন জি স্ট্যান্ড, মাইক্রো স্ট্যান্ড পৌরসভার অধিনে। তারা হস্তক্ষেপ করলে এখানে শৃঙ্খলতা ফিরে আসবে।
চাঁদপুর সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত আহমেদ মজুমদার এর নিকট এই বিষয়ে জানতে চাইলে তার ব্যবহারিত গ্রামীন ফোন নাম্বারে বারংবার কল করেও পাওয়া যায়নি।