শীত মৌসুমে চাঁদপুরের মতলব আইসিডিডিআরবিতে (আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আসিডিডিআরবি) রোটা ভাইরাসে (ডায়রিয়া) আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। গড়ে দৈনিক ২৫০-৩০০ রোগী ভর্তি হচ্ছে। তবে, অভিভাবকদের আতঙ্কিত না হয়ে রোগীদের স্থানীয় সরকারি হাসপাতাল বা মতলব হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। গবেষণা কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে গত ডিসেম্বরে রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত ৯ হাজার ৩৩ শিশু চিকিৎসা নিয়েছে চাঁদপুরের মতলব আইসিডিডিআরবিতে। এর আগের বছর একই সময় চিকিৎসা নিয়েছিল সাত হাজার ৫৫১ শিশু। নতুন বছরের প্রথম ১০ দিনে ভর্তি হয়েছে দুই হাজার ৩৮০ শিশু। শীত মৌসুমে গড়ে দৈনিক ২৫০-৩০০ রোগী ভর্তি হচ্ছে। চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নরসিংদী, শরীয়তপুর ও মুন্সিগঞ্জ থেকে প্রতিনিয়ত এই হাসপাতালে ছুটে আসেন রোগীরা। তবে রোটা ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে দুই বছরের কম বয়সী শিশুরা।
গবেষণা কেন্দ্রটির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রোটা ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত চাঁদপুর সদর, ফরিদগঞ্জ, কচুয়া, বরুড়া, বুড়িচং, চান্দিনা, মুরাদনগর, লক্ষ্মীপুর সদর ও চাটখিল উপজেলার শিশুরা। তবে ফেব্রুয়ারি থেকে আক্রান্তের হার কমবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
সন্তানের চিকিৎসা করাতে লক্ষ্মীপুর থেকে এসেছেন দিদার আলী। তিনি বলেন, শিশুর হঠাৎ বমি, জ্বর, পাতলা পায়খানা শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে স্থানীয় চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়া হলেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। পরে মতলব ডায়রিয়া হাসপাতালে নিয়ে আসি। এখন সুস্থ, বাড়ি নিয়ে যাবো।
আইসিডিডিআরবি মতলব হেলথ রিসোর্স সেন্টারের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. চন্দ্র শেখর বলেন, এ ভাইরাসে আক্রান্ত শিশুদের সুস্থ হতে ৫-৭ দিন সময় লাগে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
এ বিষয়ে হেলথ রিসোর্স সেন্টারের প্রধান ডা. আলফজল খান জানান, গবেষণা কেন্দ্রটির ইতিহাসে এই প্রথমবার ডিসেম্বর মাসে সর্বাধিক রোগী ভর্তি হয়েছে, যা স্বাভাবিকের তুলনায় তিনগুণ বেশি রোগী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত চিকিৎসক ও জনবল নিয়োগ করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, শীতকালে শিশুরা সাধারণত রোটা ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে থাকে। ভর্তি হওয়া ৮৫ শতাংশ রোগীই রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত। আক্রান্ত শিশুদের বুকের দুধ ও স্বাভাবিক খাবার খাওয়ানোর পরামর্শ দেন তিনি।