চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে নকল সরবরাহের দায়ে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ছায়েদুল ইসলামের (৫৩) দুই বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেই সঙ্গে তাকে এক হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়।রোববার (৩ মার্চ) শাহরাস্তি পৌর এলাকার শাহরাস্তি চিশতিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রে দাখিল ইংরেজি প্রথম পত্র পরীক্ষা চলাকালে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, বেলা ১১টায় সরকারি গাড়ি দূরে রেখে ইউএনও হেঁটে কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। এ সময় কেন্দ্রের ভেতরে অবস্থানরত অফিস সহকারী, আয়া ও কিছু শিক্ষক ছোটাছুটি শুরু করেন। ইউএনও কেন্দ্রে অনিয়ম বা নকলের বিষয়টি আন্দাজ করতে পেরে শ্রেণিকক্ষ এবং শিক্ষার্থীদের দেহ তল্লাশি করেন। পরে শ্রেণিকক্ষের বাইরে ও পরীক্ষা কেন্দ্রের বাউন্ডারি সীমানার মধ্যে অসংখ্য হাতে লিখে সমাধান করা প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়। পরে ধারণা করা হয়, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের উপস্থিতি টের পেয়ে শিক্ষকদের ইঙ্গিতে পরীক্ষার্থীরা নকল জানালা দিয়ে শ্রেণিকক্ষের বাইরে ফেলে দিয়েছিল।
পরে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, রাজাপুরা আল আমিন ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. ছায়েদুল ইসলাম পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রিন্টারে ২৫-৩০ কপি হাতে লেখা নকলের প্রিন্ট বের করেছেন। মোবাইল ফোনের বিষয়ে জানতে চাইলে বাসায় তিনি মোবাইল ফোন রেখে এসেছেন বলে জানান। কিন্তু তার নম্বরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফোন করলে পাশের ব্যাগের মধ্যে মোবাইল ফোনটি বেজে ওঠে।
মোবাইল ফোনে প্যাটার্ন লক ছিল, তাকে লকটি খুলতে বললে তিনি তাৎক্ষণিক মোবাইল থেকে কিছু একটা ডিলিট করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে তার মোবাইল ফোন তল্লাশি করে হোয়াটসঅ্যাপের মধ্যে শ্রেণিকক্ষের বাইরে উদ্ধারকৃত হাতে লেখা নকলের হুবহু ছবি পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ মো. ছায়েদুল ইসলাম বলেন, তার এক ছাত্র এগুলো সমাধান করে তাকে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়েছে। পরে তিনি কেন্দ্রের প্রিন্টারে প্রিন্ট করে রুমে রুমে নকল সরবরাহ করেছেন।শাহরাস্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইয়াসির আরাফাত জানান, দোষ স্বীকার করায় আইন অনুযায়ী রাজাপুরা আল আমিন ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. ছায়েদুল ইসলামকে এক হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।