বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক উপ-কমিটিতে বিএনপি নেতার পদ পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।। বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে। এ নিয়ে সোস্যাল মিডিয়ায় কচুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-দপ্তর সম্পাদক ও গোহট উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কবির হোসেন তাঁর নিজস্ব ফেসবুক আইডি থেকে বিএনপি নেতা মো. আব্দুল আউয়াল খানকে আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য পদ দেওয়াকে কেন্দ্র করে পোস্ট করলে ক্ষোভের সৃষ্টি দেখা যায় সাধারণ মানুষের মাঝে। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে প্রতিবাদ করেন কবির হোসেন। এদিকে বিএনপির পদে থাকা এসময়ের বিএনপির ক্যাডার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ধর্ম বিষয়ক উপ-কমিটিতে কিভাবে ঠাঁই পেলেন তা নিয়ে চলছে নানান গুঞ্জন। গত ১২ মার্চ প্রকাশিত কমিটি হাতে পায় গণমাধ্যম কর্মীরা।
এলাকাবাসী জানায়, গোহট উত্তর ইউনিয়নের পালগীরি গ্রামের খন্দকার মোবারক মাওলানা ছেলে খন্দকার গোলাম মাওলা নকশেবন্দী। তাঁর চাচা খন্দকার ক্যাপ্টিন অবসরপ্রাপ্ত আব্দুর রব মুসলীম লীগ থেকে কচুয়া আসনে নির্বাচন করেন। তাঁর চাচাতো ভাই খন্দকার হারুনুর রশিদ কচুয়া উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমির ছিলেন এবং এ আসন থেকে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে নির্বাচন করেছিলেন। খন্দকার গোলাম মাওলা নকশেবন্দী কালিয়াপুুর দরবার শরিফের মুরিদ এবং আব্দুল আউয়াল তার পাশের বাড়ির সে সুবাদে খন্দকার গোলাম মাওলা নকশেবন্দী সাথে সু-সর্ম্পক গড়ে তুলে আব্দুল আউয়াল কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক উপ-কমিটিতে পদ বাকিয়ে নেন।
গোহট উত্তর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. সিরাজ মেম্বার জানান, মো. আব্দুল আউয়াল খান বিএনপি ক্ষমতা থাকাকালীন সময়ে প্রভাবশালী নেতা ছিলেন। সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ড. আ.ন. ম এহসানুল হক মিলনের সাথে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিলো।
গোহট উত্তর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারন সম্পাদক মো. আবু আব্দুল্লাহ নয়ন বলেন, আমি ২০১৩ সাল থেকে ইউনিয়ন বিএনপির সাধারন সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব নেই। এর আগের বিএনপি কমিটিতে আব্দুল আউয়াল যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক ছিলো। ওই কমিটির সভাপতি মো. শাহ আলম পাটোওয়ারী ছিলো।
মো. আব্দুল আউয়াল খান জানান, এক সময় আমি বিএনপি’র রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলাম। ২০১০ সালে আওয়ামী লীগে যোগদান করি। আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-দপ্তর সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান মো. কবির হোসেন জানান, মো. আব্দুল আউয়াল ২০০১ থেকে ২০০৬ পযর্ন্ত ইউনিয়ন বাসীর কাছে এক আতংকের নাম ছিলো। তার অত্যাচারে আওয়ামী লীগের নেতা থেকে শুরু করে সমর্থকরাও তার অত্যাচারের হাত থেকে রেহাই পাইনি। এমন কোনো কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিলো না যে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মারধর জমিজমা দখল ও ধর্ষণ তার নিত্যদিনের কর্মকাণ্ড ছিলো। আমি উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক ছিলাম,বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-দপ্তর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। কবে কোথায় আব্দুল আউয়াল আওয়ামী লীগে যোগদান করছে তা আমার জানা নেই। আব্দুল আউয়াল কিভাবে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক উপ-কমিটিতে পদ পেলেন এ প্রশ্ন আমার আপনাদের সাংবাদিকদের কাছে।
আব্দুল আউয়াল হাতে নির্যাতিত আওয়ামী লীগের এক কর্মী জানান, কিভাবে বিএনপির নেতা আব্দুল আউয়াল আওয়ামী লীগের উপ-কমিটিতে পদ পেলেন। কোনো যাচাই বাচাই ছাড়াই কি আওয়ামী লীগের পদ দেওয়া হয় ?
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান শিশির জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি। একজন বিএনপির নেতা কিভাবে আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য হলেন তা আমার বোধগম্য নয়। যা স্থানীয় আওয়ামী লীগ কোনো ভাবেই মানতে পারছে না ।