আমাদের পরিচিত খাবারের মধ্যে মিষ্টি অতি জনপ্রিয় একটি খাবার। আদর-আপ্যায়ন সহ যে কোন অনুষ্ঠানে মিষ্টি ছাড়া চলেই না। যে কোন নিমন্ত্রণে অংশ নিতে চাইলে মানুষ প্রথমে যায় মিষ্টির দোকানে, অতঃপর মিষ্টি কিনে যায় নিমন্ত্রিত অনুষ্ঠানে। এমনকি যে কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠানেও মিষ্টির বিকল্প যেন কিছু নেই। কিন্তু প্যাকেটের বাড়তি ওজনের কারণে প্রতিদিনই কেনাকাটায় ঠকছেন ক্রেতারা। ভারী প্যাকেটের নিচে চাপা পড়ে যায় মিষ্টি জাতীয় খাবারের আসল ওজন। একই ঘটনা ঘটে মিষ্টি, দইসহ এসব পণ্যে। চাঁদপুর শহর, হাইমচর, ফরিদগঞ্জে সহ রস বিলাসের ৭ টি শাখা রয়েছে। প্রতিদিন এই সকল শাখা গুলো থেকে প্রচুর পরিমাণে মিষ্টি ও মিষ্টি জাতীয় পণ্য বিক্রি হচ্ছে। এই সুযোগে রস বিলাস সহ শহরের বিভিন্ন মিষ্টির দোকান অধিক মুনাফার লক্ষ্যে ভারী বক্স ব্যবহার করে। সরজমিনে দেখা যায় এক একটি বক্সের ওজন ১০০ গ্রাম করে। বক্সের অতিরিক্ত ১০০ গ্রাম ওজনের কারনে ১ কেজির পরিবর্তে ৯০০ গ্রাম করে মিষ্টি পাচ্ছে ভোক্তাগন। অনেক সময় এর প্যাকেটগুলো দেখলে ভোক্তাদের শরীর জ্বলে। কিন্তু অসহায় হয়ে পাথরের মতো ওজনের মিষ্টি প্যাকেট মিষ্টির সমমূল্য দিয়েই কিনতে হয়! ভোক্তাগন অসহায় হয়ে মান সম্মানের ভয়ে তর্কে না জড়িয়ে তা মেনে নেয়।
২০ এপ্রিল শনিবার দুপুরে চাঁদপুর শহরের বাস স্ট্যান্ড স্বর্ণখোলা অবস্থিত রস বিলাসের কারখানায় গেলে ম্যানাজার মোঃ আব্দুল করিম বলেন কারখানার ভিতরে প্রবেশ নিষেধ। এই সময় অফিস কক্ষে গিয়ে ম্যানাজার মোঃ আব্দুল করিম এর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন রস বিলাসের ৭ টি শাখা। রস বিলাসের শাখা গুলোতে ২৭০ টাকা দরে করে মিষ্টি, ৩০০ টাকা লাডু, মতিলাডু ৩২০ টাকা, ছানা মিষ্টি ৪৫০ টাকা, কাঁচা গোল্লা ৬০০ টাকা কেজি ধরে বিক্রি হচ্ছে। ১০০ গ্রাম প্যাকেটের ওজনের সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন অন্যান্য দোকানদার বানায় তাই আমরা বানাই। ১০০ গ্রাম ওজনের শুধু প্যাকেটের মূল্য গিয়ে দাড়ায় ২৭, ৩০, ৩২, ৪৫ ও ৬০ টাকা পর্যন্ত। শুধু প্রতি কেজি মিষ্টি থেকে শুধু প্যাকেট থেকে লাভ হচ্ছে এই টাকা। তাহলে মাসে বছরে কত লক্ষ লক্ষ টাকা ভোক্তাদের ঠকিয়ে মালিক পক্ষ লাভবান হচ্ছে জানতে চাইলে এর সঠিক উত্তর দিতে পারেনি ম্যানাজার।
রস বিলাসের মালিক মোঃ আতিকুর রহমান এই বিষয়ে বলেন অন্যান্য মিষ্টি দোকান এই রকম প্যাকেট বানাছে তাই আমরা বানাই। ১০০ গ্রামের ভারি প্যাকেট কতটুকু বৈধ তা জানতে চাইলে তিনি বলেন বৈধতা আপনারা খোঁজে দেখেন।
চাঁদপুর ভোক্তা অধিদপ্তরের সহাকারী পরিচালক নূর হোসেন রুবেল বলেন ভোক্তাগন যে ওজনে ১০০ গ্রাম কম পাচ্ছে এটা ঐ ভাবে তাদের নজরে আসে না। ওজনে কারচুপি করলে আমরা তাদেকে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো। আমরা চাই ভোক্তাগন যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। আমরা খুব শীঘ্রই এদের বিরুদ্ধে অভিযানে যাবো।