দীর্ঘ ১৪ মাস বন্ধ থাকার পর গত মার্চের ১০ তারিখে চাঁদপুর ১৫০ মেগওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র উৎপাদনে আসে। মার্চ মাস চালু ছিল। চলতি এপ্রিল মাসের ৫ তারিখে জেনারেটর বেয়ারিংয়ে ওয়েল লিকেজ থেকে ছোট আকারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। যার ফলে পুরো বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়া হয়।
শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে শহরের নিউ ট্রাক রোড গুনরাজদী এলাকায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গিয়ে উৎপাদন বন্ধ অবস্থা দেখা যায়। তবে কেন্দ্রের দায়িত্বরত প্রকৌশলীরা বিভিন্ন অংশে কাজ করছেন।
চাঁদপুর ১৫০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের সহকারী প্রকৌশলী তাজুল ইসরাম রাজু বলেন, ২১ এপ্রিল ইন্দোনেশিয়া থেকে প্রকৌশলীরা আসবে। চলতি মাসের শেষ পর্যন্ত সিডিউল মেরামত কাজ চলবে। আগামী ১ মে থেকে পুনরায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি উৎপাদনে যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী অভিজিৎ কুরি বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর গত ১০ মার্চ ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন গ্যাস টারবাইন ইউনিট চালু করা হয়। মাত্র ২৫ দিন বিদ্যুৎ উৎপাদন শেষে ৫ এপ্রিল এই ইউনিটের একটি জেনারেটরের বেয়ারিংয়ে ওয়েল লিকেজ থেকে ছোট আকারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
এ সময় কর্তব্যরত প্রকৌশলী দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পাশাপাশি ইউনিটটি শাটডাউন করে দেয়। এর পর থেকে বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদন। তাৎক্ষণি আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারায় বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। তবে কি ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা রিপেয়ারিং কাজ শুরু হলে বলা যাবে।
অভিজিৎ কুরি আরও বলেন, এর আগে নিয়মিত পরীক্ষার অংশ হিসেবে ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয় চাঁদপুর ১৫০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। সকল কাজ শেষ করে ২০২৩ সালের মার্চ মাসে বিদ্যুৎকেন্দ্রের গ্যাস টারবাইন ইউনিটটি চালু করতে গেলে ধরা পড়ে গ্যাস বুস্টার নামক যন্ত্র অকেজো। রিজার্ভে থাকা গ্যাস বুস্টার যন্ত্রটি আগে থেকে অকেজো থাকায় বন্ধ হয়ে যায় পুরো বিদ্যুৎ কন্দ্রটি। পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে গ্যাস বুস্টার ক্রয়সহ আমেরিকা থেকে আনা হয় প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। চীন, ইন্দোনেশিয়ান এক্সপার্ট টিম ও বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকৌশলীদের যৌথ চেষ্টায় সম্পন্ন করা হয় নতুন গ্যাস বুস্টার ইনস্টলেশনের কাজ।
২০১০ সালের ২৫ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১২ সালের মার্চ মাস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করে কেন্দ্রটি। চীনা কোম্পানি চেংদা ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড এক হাজার ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করে।