চাঁদপুরে ব্যবসায়ী হত্যার মামলায় রাজীব ওরফে রাজু চন্দ্র শীল (৩০) নামের এক যুবককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রোববার (২১ এপ্রিল) দুপুরে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. মহসিনুল হক এ রায় দেন।
কারাদণ্ডপ্রাপ্ত রাজু কুমিল্লার দেবিদ্বার থানার ফতেহাবাদ গ্রামের সুভাষ চন্দ্র শীলের ছেলে। ঘটনার সময় তিনি চাঁদপুর শহরের বিপণিবাগ বাজারের টিপটপ হেয়ার কার্ট সেলুনে কাজ করতেন।
হত্যার শিকার নারায়ণ চন্দ্র ঘোষ শহরের ঘোষ পাড়ার বাসিন্দা। তিনি শহরের বিপণীবাগসহ বিভিন্ন দোকানে দই ও মিষ্টি বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ২০২১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে নারায়ণ চন্দ্র ঘোষ আসামি রাজুর সেলুনে যান। কারণ নারায়ণ চন্দ্র ঘোষ সুদে টাকা ঋণ দিতেন। রাজু তার কাছ থেকে দৈনিক ২০ টাকা সুদের বিনিময়ে দুই হাজার টাকা ঋণ নেন। নিয়মিত ওই সুদ পরিশোধ করলেও ঘটনার দিন করতে পারেননি। রাজু নারায়ণ চন্দ্র ঘোষকে চলে যেতে বলেন। পরে রাত ১২টার দিকে আবার আসলে তার চুল কাটতে এবং শেভ করতে বলেন। ঠিক ওই সময় রাজু ক্ষিপ্ত হয়ে শেভ করার এক পর্যায় ধারালো খুর দিয়ে তার গলা কাটেন। পরে তার মরদেহ বিপণিবাগ বাজারের শরীফ স্টিলের নিকট বস্তায় করে রেখে আসেন।
পরদিন ১৬ সেপ্টেম্বর সকাল ৭টায় স্বজনরা স্থানীয়দের মাধ্যমে নারায়ণ চন্দ্র ঘোষের মরদেহের খোঁজ পান। পুলিশ এসে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে আইনি প্রক্রিয়া শেষ করেন।
এ ঘটনায় নারায়ণ চন্দ্র ঘোষের ছেলে রাজীব ঘোষ ১৭ সেপ্টেম্বর চাঁদপুর সদর মডেল থানায় রাজীব ওরফে রাজু চন্দ্র শীলকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ ২১ সেপ্টেম্বর আসামি রাজুকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেন।
মামলাটি তদন্ত করেন চাঁদপুর সদর মডেল থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাশেদুল ইসলাম। তিনি তদন্ত শেষে ২০২২ সালের ১৪ মার্চ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রণজিত রায় চৌধুরী বলেন, মামলাটি দুই বছরের অধিক সময় আদালতে চলাকালীন ২১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। আসামি নিজের অপরাধ স্বীকার, সাক্ষ্যপ্রমাণ এবং মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে এ রায় দেন।
আসামী কারাগারে থাকা অবস্থায় ধর্ম পরিবর্তন করে মুসলিম হন। তার বর্তমান নাম আবদুর রহমান বলে তিনি নিজেই আইনজীবীকে জানান।