চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাজারে কেনা-বেচা শুরু হয়েছে গোপালভোগ আম। তবে গত মৌসুমের তুলনায় এবার আমের দাম বেশি বলে জানাচ্ছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। গত মৌসুমের তুলনায় এবার গোপালভোগ আমের দাম উঠেছে দ্বিগুণ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলতি মৌসুমে গুটি জাতের পর এই প্রথম সুস্বাদু গোপালভোগ আম বাজারে উঠেছে। জেলার পুরাতন বাজার এলাকায় গোপালভোগ কেনা-বেচা শুরু হয়েছে। এই বাজারে প্রকারভেদে প্রতি মণ গোপালভোগ আম বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকায়।
পুরাতন বাজারের আম ব্যবসায়ী আবু জার গিফারি ঢাকা পোস্টকে বলেন, গোপালভোগ বাজারে এসেছে। তবে গত বছরের তুলনায় এবার দাম বেশি।
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, গত বছর যে বাগানে আম হয়েছিল ১৪০০ মণ সেই বাগানে এবার আম হয়েছে ৮০ মণের মতো। তাই গত বছর যে গোপালভোগ আম ১৪০০ থেকে ১৬০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছি সেই আম এবার ২৮০০ থেকে ৩২০০ টাকায় বিক্রি করছি।
আম ব্যবসায়ী মিলন বলেন, এ বছর আমের পরিস্থিতি খুবই খারাপ। আমার বাগানে গত বছর ৩৫০ মণের মতো গোপালভোগ আম হয়েছিল। এবার ১৫০ মণের মতো হয়েছে। তবে আম কম হলেও দাম ভালো পাচ্ছেন বলে জানান তিনি।
পুরাতন বাজারের আরেক আম ব্যবসায়ী লাল মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ বছর আম খুবই কম হয়েছে। সে কারণে আমের দাম বেশি। গত বছর গোপালভোগ আম ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা মণ বিক্রি করেছি। এই বছর সেই আম বিক্রি করছি ২৫০০ থেকে ৩২০০ টাকায়। দাম বেশির কারণে মানুষ কিনতে পারছে না, বাজারে ক্রেতার পরিমাণও কম। আজকে সারাদিনে মাত্র ১৫ মণের মতো বিক্রি করেছি।
চাকরির সুবাদে দীর্ঘদিন চাঁপাইনবাবগঞ্জে আছেন নুর মোহাম্মদ। পুরাতন বাজারে এসেছেন মৌসুমের প্রথম আম কিনতে। তিনি জানান, গতবারের তুলনায় আমের দাম অনেক বেশি।
পুরাতন বাজারের আমের আড়তদার আশরাফুল ইসলাম বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম বরাবরই সুমিষ্ট ও সুস্বাদু। গত বছরের তুলনায় এ বছর আমের খুব সংকট। সীমিত পরিমাণে আম বাজারে আসছে। এই সময় আমের বাজারে প্রচুর ভিড় থাকে তবে আমের দাম ক্রেতাদের নাগালের বাইরে যাওয়ার কারণে ক্রেতার পরিমাণ কম।
পুরাতন বাজারের আমের ইজারাদার জনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাজারে এখন সীমিত পরিসরে গোপালভোগ আম আসছে। এরপর পর্যায়ক্রমে খিরসাপাতিসহ আরও আম আসবে। গত বছরের তুলনায় এ বছর গোপালভোগ আমের দাম দ্বিগুণ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কৃষি বিভাগের সূত্রমতে, বৈরী আবহাওয়ার কারণে এবার ম্যাংগো ক্যালেন্ডার ঘোষণা করেনি জেলা প্রশাসন। আম পরিপক্ব হলেই বাজারজাত করতে পারবেন আমচাষিরা। এ ছাড়া এবার চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩৭ হাজার ৬০৪ হেক্টর জমিতে আমবাগান রয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টন। তবে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।