ঈদুল আজহায় যেসব পশু কোরবানি করা হবে সেগুলোর চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকার মধ্যে গরুর চামড়ার দাম ধরা হয়েছে প্রতি বর্গফুট ৫৫ থেকে ৬০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে প্রতি বর্গফুটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা।
সোমবার (৩ জুন) সচিবালয়ে ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে কাঁচা চামড়ার মূল্য নির্ধারণ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিয়ে আয়োজিত এক বৈঠক শেষে চামড়ার নতুন মূল্য ঘোষণা করা হয়।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটুর উপস্থিতিতে নতুন মূল্য ঘোষণা করেন বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন।
গতবারের চেয়ে এবার (২০২৪) প্রতি বর্গফুট চামড়ার দাম ৫ টাকা বাড়ানো হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রতি পিস চামড়ার সর্বনিম্ন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এবার ঢাকায় প্রতি পিস গরুর চামড়ার (লবণযুক্ত) সর্বনিম্ন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ২০০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ১ হাজার টাকা।বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জানান, এবারের ঈদে খাসির চামড়ার দাম (লবণযুক্ত) প্রতি বর্গফুট ২০ থেকে ২৫ টাকা এবং বকরির চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ১৮ থেকে ২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
গত বছর ঢাকার মধ্যে কোরবানির গরুর চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল প্রতি বর্গফুট ৫০ থেকে ৫৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে প্রতি বর্গফুট ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা। আর খাসির চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল প্রতি বর্গফুট ১৮ থেকে ২০ টাকা এবং বকরির চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ১২ থেকে ১৪ টাকা।
বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন বলেন, চামড়া সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। অতিরিক্ত গরমে চামড়া নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি এ বছর। এজন্য চামড়া ছাড়ানোর সাথে সাথে লবণ দেওয়া।
এসময় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ইটিপি প্ল্যান নিয়েছি সেটা হয়ে যাবে। বেসরকারি খাতেও ইটিপি তৈরি করা হচ্ছে। চামড়া জাতীয় সম্পদ। সেটা যাতে কোনোভাবে নষ্ট না হয়। আমরা বা সরকার পলিসি মেকার। ট্যানারি মালিকরা যদি একটি মূল্য নির্ধারণ করে দেয় তাহলে ভালো হয়। চামড়া সংরক্ষণের ওপর দাম নির্ভর করে।
তিনি বলেন, এ বছর কোরবানিতে আমাদের এক কোটি ৭ লাখ পশুর চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ আছে এক কোটি ২৯ লাখ পশু। এর মধ্যে ৫৫ লাখ গরু মহিষ এবং বাকিগুলো উট, ছাগল, ভেড়াসহ অন্যান্য প্রাণি রয়েছে। এ বছর আমরা শতভাগ চামড়া সংরক্ষণের চেষ্টা করব।
গত বছর (২০২৩) ঢাকায় প্রতি বর্গফুট গরুর লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার দাম ৫০ থেকে ৫৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর খাসির লবণযুক্ত চামড়ার দাম ১৮ থেকে ২০ টাকা এবং বকরির চামড়া ১২ থেকে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
তার আগের বছর (২০২২) ঢাকায় প্রতি বর্গফুট গরুর লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার দাম ৪৭ থেকে ৫২ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৪০ থেকে ৪৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর খাসির লবণযুক্ত চামড়ার দাম ১৮ থেকে ২০ টাকা এবং বকরির চামড়া ১২ থেকে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
২০২১ সালে ঢাকায় প্রতি বর্গফুট গরুর লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার দাম ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ছিল ৩৩ থেকে ৩৭ টাকা। খাসির লবণযুক্ত চামড়ার দাম ছিল প্রতি বর্গফুট ১৫ থেকে ১৭ টাকা এবং বকরির চামড়া ছিল ১২ থেকে ১৪ টাকা বর্গফুট।
গত কয়েক বছর ধরে সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া বেচাকেনা হচ্ছে না। সিন্ডিকেটের কারণে পানির দরে চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এবারও সেই সিন্ডিকেটের ইচ্ছাতেই চামড়া বাজার চলবে কি না সে বিষয়ে কোনো কিছু বলেননি প্রতিমন্ত্রী।