২০১৮ সালে কোটা বাতিল করে দেওয়া প্রজ্ঞাপন পুনর্বহালের দাবিতে ফের শাহবাগ অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৩ জুলাই) বিকেল পৌনে ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শাহবাগে আসেন শিক্ষার্থীরা। এরপর তারা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন। এ সময় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।এর আগে শিক্ষার্থীরা দুপুর আড়াইটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে অবস্থান নেন। সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মৎস্য ভবন হয়ে শাহবাগে যান।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’; আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’; ‘আঠারোর পরিপত্র, পুনর্বহাল করতে হবে’; ‘কোটাপ্রথা নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক’; ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটাপ্রথার কবর দে’; ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাই নাই’; ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্র সমাজ জেগেছে’ স্লোগান দেন। এ সময় পুলিশ সদস্যদের মোড়ের চারপাশে অবস্থান নিতে দেখা যায়।আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা যখন কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি তখন আমাদের বলা হয়, আমরা পিছিয়ে পড়াদের অধিকার বিনষ্ট করছি। পিছিয়ে পড়া মানুষ কাদের বলে? বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষ, লাখ লাখ পরিবার আছে যারা মাত্র ২০ হাজার টাকা আয়ে পুরো পরিবার চালায়। আর বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারগুলো শুধু সম্মানি ভাতাই ২০ হাজার টাকা পান। আর তাদের পরিবারে যারা উপার্জন করতে সক্ষম তাদের কথাগুলো আমরা বাদই রাখছি।
তারা বলেন, সেই পরিবারগুলোকে আমরা কীভাবে পিছিয়ে পড়া বলতে পারি? তারা বলে বেড়ায়, তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আমলে নিপীড়নের শিকার হয়েছে। আমরা মনে করি, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আওয়ামী লীগের চেয়ে বড় শুভাকাঙ্ক্ষী আর কেউ হবে না। সেখানে চতুর্থবারের মতো যেখানে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আছে, সেখানে আজও মুক্তিযোদ্ধাদের অধিকার আদায় হয়নি এটি একটি চরম প্রহসনমূলক কথা।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, আজ পোষ্যকোটা চালু করা হয়েছে। এটা কাদের পক্ষে? যারা ইতোমধ্যে একটা সরকারি চাকরি করে তাদের ছেলেমেয়েদের পক্ষে। আর কাদের বিরুদ্ধে? যে কৃষক পরিবারের সন্তান, যেই কৃষক হাড়ভাঙা খাটুনি খেটে তার সন্তানকে পড়াশোনা করায় তার বিরুদ্ধে। জেলে, মজুর, কৃষক, রিকশাওয়ালা যে ভাইবোন রয়েছে তাদের সন্তানেরা যারা পড়াশোনা করছে তাদের বিরুদ্ধে। তাই আমাদের দাবি হচ্ছে, আঠারো সালের পরিপত্রটি সবার আগে বহাল করতে হবে।এর আগে মঙ্গলবার (২ জুলাই) বিকেল পৌনে ৪টায় শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিকেল পৌনে ৫টায় অবরোধ তুলে নেন।