বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির স্মরন সভায়
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন,অশোক রায় নন্দী ছিলেন একজন সাদা মনের মানুষ, আপাদমস্তক অহংকারমুক্ত একজন সৎ মানুষ। একজন নিভৃতচারী মানুষ। নিজের প্রচার বা প্রকাশ কোনটিই চাইতেন না। সদালাপী বন্ধুবৎসল একজন মানুষ; পেশা হিসেবেও বেছে নিয়েছিলেন ৩ পুরুষের এক সৃজনশীল ব্যবসা-প্রকাশনা শিল্পকে।
রবিবার(৭জুলাই) বাংলাবাজার কে.এল জুবিলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সিনিয়র সদস্য , নবযুগ প্রকাশনী ও রিডার্স ওয়েজের কর্ণধার, ছায়ানটের অন্যতম সদস্য, গুনী প্রকাশক, থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাট্যজন অশোক রায় নন্দীর অকাল প্রয়াণ উপলক্ষে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত স্মরণসভায় এসব কথা বলেন।
জাহাঙ্গীর কবির নানক আরো বলেন,মানুষের উপকার করে বেড়ানোই ছিল যার নেশা, তিনিই অশোক রায় নন্দী। প্রকাশনা শিল্প, নাটক ও নাট্যকলার উন্নয়নে ছিলেন একজন নিবেদিত প্রাণ ও সামনের সাড়ির যোদ্ধা। সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও নাট্যজন অশোক রায় নন্দী বিশ্বাস করতেন, “নাটক কেবল চিত্ত বিনোদনের জন্যই নয়, নাটক সমাজ পরিবর্তনের এক সুতীক্ষ্ণ হাতিয়ারও বটে।” একজন সৃজনশীল মানুষ হিসেবে নাটকের স্বার্থে ছুটে যেতেন সর্বত্রই। এমনকি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা, জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছেও ছুটে গেছেন বেশ কয়েকবার, কেবল নাটক আর নাটকের মানুষগুলোর কথা বলতে। কি করে শিল্পকলার অন্যতম শাখা এ নাটককে আরো সমৃদ্ধ ও গণমুখী করা যায়।
বিশেষ অতিথি হিসেবে স্মৃতিচারণা করে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, নাট্যজন আসাদুজ্জামান নূর এমপি বলেন, অশোক রায় নন্দী
একেবারেই নিভৃতচারী, কাজ পাগল আত্মভোলা, নিরলস পরিশ্রমী এই মানুষটির অকস্মাৎ চলে যাওয়ায় এক অপূরণীয় ক্ষতি সাধন হয়েছে এ অঙ্গনের। নির্লিপ্তভাবে কাজ করে গেছেন। লোভহীন একজন মানুষ এই অশোক রায় নন্দী।
চলনে, বলনে, চিন্তায়, মননে অসাম্প্রদায়িক ভাবধারায় গড়ে তুলেছেন নিজেকে। যার প্রতিটি কর্মেই ছিল এর সুস্পষ্ট ছাপ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন নির্ভীক সেনানী ছিলেন অশোক রায় নন্দী। প্রকাশনার ক্ষেত্রেও এই ভাবাদর্শ জ্যোতি ছড়িয়েছে প্রতিটি কর্মে। একটি পুস্তক প্রকাশনার ক্ষেত্রে বারবার পড়েছেন পাণ্ডুলিপি, এরপর চুলচেরা ভাবে দেখেছেন প্রুফ। নির্ভুল বানানের জন্য ছিল তার উদ্বেগ, উৎকন্ঠা। তিনি ছিলেন একজন সৃজনশীল প্রকাশক, যার বড় কৃতত্ব হলো নিজস্ব প্রকাশনায় ৫০০ এর উপরে বই প্রকাশ করেছেন অশোক রায় নন্দী।
অশোক রায় নন্দীর স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য প্রদান করেন প্রয়াত অশোক রায় নন্দীর ছোট ভাই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী।
ভারতের বিশিষ্ট অভিনেতা ও নাট্যজন, শ্রী বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী বলেন,প্রজ্ঞা, মেধা, মনন ও দক্ষতায় যে ক’জন নিরলস সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে অশোক রায় নন্দী আজীবন স্বরণীয় হয়ে থাকবে। তার কর্মেই সে বেঁচে থাকবে। আমাদের দুই বাংলাতেই নাট্যজগতে তার অবদান নাট্যপ্রেমিরা আজীবন মনে রাখবে। তিনি একজন উদার মনের মানুষ ছিলেন।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী, তারিক সুজাত সাধারণ সম্পাদক, জাতীয় কবিতা পরিষদ, ডাঃ আশিস গোস্বামী বিশিষ্ট নাট্যকার ও নাট্য গবেষক (ভারত), বিশিষ্ট অভিনেতা কাজী রাকায়েত,বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক তপন বাগচী, পুস্তক প্রকাশক সমিতির সহসভাপতি
আলমগীর শিকদার লোটন,মাজহারুল ইসলাম প্রমুখ।
সভাপতিত্ব করেন,বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সভাপতি মো. আরিফ হোসেন ছোটন।
এছাড়াও বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সুধীজন উপস্থিত ছিলেন।