বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শেখ হাসিনার সরকারের পতনকে অনেকেই বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন বলে মনে করছেন। অতীতে এভাবে আরও কয়েকটি দেশে ছাত্র আন্দোলনে সরকারের পতন হয়েছে বা তারা নীতি পরিবর্তনে বাধ্য হয়েছে। জেনে নেওয়া যাক তেমনই কয়েকটি দেশের কথা-
শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্টের পলায়ন
বাংলাদেশের মতো শ্রীলঙ্কাতেও ২০২২ সালের এপ্রিলে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। অর্থনৈতিক সংকটের কারণে এই আন্দোলন শুরু হয়েছিল। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে দেশে ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন রাজাপাকসে।
গ্রিসের সেনা সরকার উৎখাত
১৯৭৩ সালে সেনাবাহিনীর স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে গ্রিসের ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রস্থল ছিল এথেন্স পলিটেকনিক। টানা ছয় বছরের স্বৈরশাসনে ক্ষিপ্ত হয়ে রাজপথে নামে ছাত্র-জনতা। এক পর্যায়ে এথেন্স পলিটেকনিকের মূল ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে যায় সেনাবাহিনীর ট্যাংক। এতে মারা যান ১৫ জন। অবশেষে ১৯৭৪ সালে গণতন্ত্রের আঁতুড়ঘর গ্রিসে গণতন্ত্র ফিরে আসে।
যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ
ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে অনেকদিন ধরে বিক্ষোভ চলছিল। এ অবস্থায় ১৯৭০ সালে প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন কম্বোডিয়াতেও আক্রমণের অনুমোদন দিলে কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে গুলিতে চারজন নিহত হলে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে গোটা দেশ। ৪০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী এতে অংশ নেন। এসব ঘটনা যুদ্ধ নিয়ে মার্কিনিদের মনোভাবে কিছুটা পরিবর্তন এনেছিল বলে মনে করেন অনেক ইতিহাসবিদ।
দক্ষিণ আফ্রিকার সোয়েটো বিপ্লব
দক্ষিণ আফ্রিকায় শ্বেতাঙ্গ শাসনের বিরুদ্ধে কয়েক দশক ধরে বিক্ষোভ হয়েছে। ১৯৭৬ সালে জোহানেসবার্গের সোয়েটো এলাকায়ও আন্দোলন হয়েছিল। ১৬ জুন শুরু হওয়া বিক্ষোভে কৃষ্ণাঙ্গ শিক্ষার্থীরা আফ্রিকান ভাষায় পড়াশোনা করতে বাধ্য হওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন। সরকার কঠোর হাতে সেই আন্দোলন দমনের চেষ্টা করলে কয়েকশ মানুষ প্রাণ হারান। ওই ঘটনার আরও দুই দশক পর আপার্থাইড বা বর্ণবাদের অবসান হয়। দেশটিতে আজও ১৬ জুন জাতীয় ছুটি হিসেবে পালন করা হয়।