১৯ আগস্ট সোমবার রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে উপসচিব মো. মাহবুব আলমের স্বাক্ষরিত স্থানীয় সরকারের পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে সারাদেশে ৩২৩ জন মেয়রের অপসারনের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর প্রজ্ঞাপনে ফরিগঞ্জ পৌরসভার ফ্যাসিস্ট মেয়র আবুল খায়েরের অপসারনের খবর পেয়ে ফরিদগঞ্জ পৌরবাসি স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে দেখা গেছে। এ ঘোষণার পর ফরিদগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে মিষ্টি বিরতরণ করা হয়েছে।
নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই দুর্নীতি আর স্বজনপ্রীতির কারনে তার কাছে সাধারণ মানুষ ছিল মূল্যহীন। বার্ষিক লাইসেন্সের নামে দরিদ্র অটোচালকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়। পূর্বে পৌরসভার মাস্টাররুলে চাকরি করা কর্মকর্তাদের অপসারণ করে অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ বানিজ্য ও দলীয় ক্যাডারদের চাকরি প্রধান করা ও তুচ্ছ কারণে পৌরসভার স্টাফদের গায়ে হাত তোলার বিষয় ছিলো তার নিত্যদিনের ঘটনা। পৌরসভার বিভিন্ন প্রকল্প থেকে চাঁদা আদায় এবং অবৈধভাবে নিজের মেয়ে নাজমুন নাহার অনিকে দিয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ করাতেন অহরহ। ফরিদগঞ্জ বাজার ও বাসস্ট্যান্ডের ইজারার নামে করতেন লুটপাট। কন্ট্রাক ভিত্তিক শালিশ বাণিজ্য করা এবং নিজ বাড়ির কাজের লোকদের বেতনের টাকা পৌরসভার পান্ড থেকে দেয়ার মতো কান্ড ঘটিয়েছেন এই মেয়র। শুধু তাই নয়, মতের অমিল হলে যাকে তাকে পৌরসভা এবং তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে শারীরিকভাবে নির্যাতনও চালাতেন তিনি।
এলাকার ভদ্র এবং নিরীহ মানুষকে রাজাকারের সন্তান বলে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা ছিল তার প্রতিদিনের কাজের রুটির অংশ। গত কয়েক বছরে ফরিদগঞ্জের বেশ কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী তার অপকর্ম তুলে ধরায় চরমভাবে নাজেহাল করেছেন তাদের। তার অনিয়মের এক সংবাদ প্রকাশের পর উপজেলার সিনিয়র এক সাংবাদিককে রাজাকারের বংশধর আখ্যায়িত করে ঐ সংবাদকর্মীর বিরুদ্ধে পৌরসভার স্টাফদেরকে দিয়ে ঝাড়ু মিছিল করার মতো ঘটনা ঘটিয়েছেন ফ্যাসিস্ট এই মেয়র। ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা তৈরিতেও তিনি ছিলেন সরব, মোটা অংকের টাকা খেয়ে মুক্তিযোদ্ধা সনদ পেতে সহায়তা করা এবং
ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে ২ লক্ষ টাকা করে চাঁদা নিয়েছেন তিনি।
অত্যাচারী ও জুলুমবাজ এই পৌর মেয়রের দোষর হিসেবে ছাত্রলীগের ক্যাডারদের দিয়ে চাঁদাবাজিসহ নানামুখী অপকর্ম চালাতেন তিনি। তার অপকর্মের মূল হাতিয়ার হিসেবে পৌরসভার মাস্টাররুলে চাকরি করা স্টাফদের ব্যাবহার করতেন। তার নানামুখী অপকর্মের প্রধান দোষর ৮নং পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের দায়চারা এলাকার বাসিন্দা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল হোসেন ছিলেন জুলুমবাজের মূল হাতিয়ার। এমনকি বার্ষিক অটো লাইসেন্স তৈরির প্রক্রিয়ায় প্রতি অটো চালকের কাছ থেকে ২ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নেয়ার ও এলাকায় স্থানীয়ভাবে প্রভাব বিস্তার করে সম্পত্তি দখলের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।