মতলব উত্তর উপজেলায় সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় মো. সোবহান প্রধান (৫২) নামে এক ব্যক্তি তাঁর মেজ ছেলের ছুরিকাঘাতে খুন হওয়ার অভিযোগে উঠেছে। গত ১৬ অক্টোবর বুধবার দুপুর একটায় উপজেলার উত্তর লুধুয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বিকেল চারটায় ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ তাঁর লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নিহত মো. সোবহান প্রধানের বাড়ি উপজেলার উত্তর লুধুয়া আমতলা গ্রামে। ওই গ্রামের মৃত আমির হোসেন প্রধানের ছেলে তিনি। চার ভাই ও তিন বোনের মধ্যে মো. সোবহান প্রধান মেজ। সোবহান আনসার বাহিনীতে চাকরি করতেন। কয়েক বছর আগে ওই চাকরি ছেড়ে বাড়ি চলে আসেন। তাঁর তিন ছেলে। অভিযুক্ত মো. রোমান (২৮) তাঁর মেজ ছেলে। আড়াই মাস আগে তিনি (রোমান) বিদেশ থেকে বাড়ি আসেন।
পুলিশ, পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, চার বছর আগে মো. সোবহান প্রধানের স্ত্রী শিরিনা বেগম মারা যান। স্ত্রী মারা যাওয়ার পর থেকে তিন ছেলে তাদের নামে সম্পত্তি লিখে দেওয়ার জন্য নানা ভাবে তাঁর (সোবহান) ওপর চাপ সৃষ্টি করনে। তাঁর মেজ ছেলে মো. রোমান বিদেশ থাকতেন। আড়াই মাস আগে তিনি বাড়িতে চলে আসেন।
সূত্রটি আরও জানায়, বাড়িতে আসার পর মো. রোমান তাঁর নামে বাড়ি ও জমি লিখে দেওয়ার জন্য বারবার তার বাবার ওপর চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন। এ নিয়ে প্রায়ই বাবা ও ছেলের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও বিরোধ তৈরি হয়। ঘটনার দুপুরে বাড়িতে নিজের নামে সম্পত্তি লিখে দেওয়ার জন্য বাবাকে চাপ দেন মো. রোমান। এ সময় বাড়িতে তার বাবা সোবহান ও তার ছোট ভাই মো. জাহিদ উপস্থিত ছিলেন। সম্পত্তি লিখে দিতে রাজি না হওয়ায় বাবার ওপর ক্ষিপ্ত হন রোমান। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রোমান তার বাবার মাথা ও বুকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান। এতে তার বাবা গুরুতর আহত হন। এ সময় তার বাবার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ও অন্যান্য স্বজন সেখানে আসেন এবং সেখান থেকে উদ্ধার করে তাঁরা মতলব দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে (সোবহান) মৃত ঘোষনা করেন । খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্থাতের জন্য থানায় নিয়ে আসে।
মো. সোবহান প্রধানের ভাতিজা মো. কাদির অভিযোগ করে বলেন, তাঁর ওই চাচার নামে ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ সম্পত্তি রয়েছে। ওই সম্পত্তির কিছু অংশ লিখে না দেওয়ায় তাঁর চাচাকে পরিকল্পিতভাবে খুন করেন তাঁর চাচাত ভাই মো. রোমান। এ ব্যাপারে থানায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তাঁর ওই চাচাত ভাইকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি। অভিযোগের ব্যাপারে মো. রোমানের মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। তার একাধিক স্বজন বলেন, ঘটনার পর থেকে রোমান গা-ঢাকা দিয়েছেন।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রবিউল হক বলেন, সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য ওই ব্যক্তির লাশ চাঁদপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তাঁর থানায় হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন।