মতলব উত্তরে বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে ছাত্র/ছাত্রী ও বর্তমান প্রজন্মের মাঝে গল্পবলা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং শোকাবহ আগস্ট উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সুজাতপুর ডিগ্রি কলেজ, সুজাতপুর নেছারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, সুজাতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সুজাতপুর কিন্ডার গার্টেনের আয়োজনে ৩০ আগস্ট বুধবার সকালে উপজেলার সুজাতপুর ডিগ্রি কলেজ অডিটোরিয়ামে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ কুদ্দুস।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ কুদ্দুস বলেন, সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস রেখে দেশের জন্য কাজ করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতিকারী এবং রাজাকারদের অপপ্রচার থেকে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ এখনো রাজাকারদের বংশধররা দেশের ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। তারা একটি মহল মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাসকে বিকৃত করে মানুষের সামণে তুলে ধরার চেষ্টা করছে। যা নতুন প্রজন্মের জন্য মারাত্মর হুমকির বিষয়।
তিনি আরো বলেন, বিট্রিশ শাসনামলের পর স্বাধীনতা লাভ করে পুর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তান নামে দুইটি ভূখন্ড নিয়ে একটি রাস্ট্র হয়। সেই হল পাকিস্তান। কিন্তু তারা পরবর্তীতের আমাদের পূর্ব পাকিস্তান অর্থ্যাৎ বাঙালী জাতির উপর শোষন করতে থাকে। এবং বাঙালী জাতির মায়ের ভাষা কেরে নিয়ে উর্ধু ভাষায় কথা বলতে বাধ্য করে। এরপরই শুরু হয় মাতৃভাষা আন্দোলন। এরপর একে একে বাঙালী জাতির উপর ঐ পাকিস্তানী বাহিনী অত্যচার নির্যাতন চালায় এবং পূর্ব পাকিস্তারের সকল অর্থ নিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানের উন্নয়নে লাগানো হয়। কিন্তু এসব বিষয়ে যখন বাঙালী জাতির অধিকার আদায়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কথা বলেন তখনই পাকিস্তানী বাহিনী আমাদের উপর আরো অত্যাচার চালায়। এরপর ৬৯ এর আন্দোলনের পর ৭১ মহান স্বাধীনতা ডাক দেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।
এমএ কুদ্দুস বলেন, সেই দিন আমরা বঙ্গবন্ধুর ডাকে ঝাঁপিয়ে পড়ি মহান মুক্তিযুদ্ধে। আমাদের কাছে কোন অস্ত্র ছিলনা, আমাদের কোন হাতিয়ান বা আত্মরক্ষার কোন কিছু ছিল না। শুধু ছিল মনের শক্তি আর বঙ্গবন্ধুর নিদের্শ, যার যা কিছু আছে তা নিয়ে নেমে পড়ো মুক্তিযুদ্ধে। আমাদের কারো গায়ে পোষাক ছিলনা, এক পোষাক বহুদিন পড়ে ছিলাম। বাশি পচা খাবার খেয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছি। আমার বড় ভাই এমএ ওয়াদুদ পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর গুলিতে মারাত্মক আহত হয়ে পড়েছিলেন। সেই থেকে দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ শেষে স্বাধীন হয় বাংলাদেশ। কিন্তু পরবর্তীতে ৭৫ এর ১৫ আগস্ট কালো রাতে বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করা হয়। তার অপরাধ হল বাঙালী জাতির অধিকার নিশ্চিত করে, মানুষের খাদ্য, স্বাস্থ্য, বস্ত্র শিক্ষা নিশ্চিত করে সোনার বাংলা গড়ার কাজ হাতে নিয়েছিলেন। আর এটা স্বাধীনতা বিরোধীরা সহ্য করতে পারেনি। তারা ভেবেছিল বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেই মনে হয় সব শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বাহিরে থাকায় বেচে যান। পরবর্তীতে তিনি দেশে ফিরে বাংলাদেশের হাল ধরেন এবং আমরা পেয়েছি ডিজিটাল বাংলাদেশ। সবধরনের সেবা, সবধরনের ভাতা থেকে শুরু করে দেশের উন্নয়ন ও মেঘা প্রকল্প। এই উন্নয়ন নিয়েও এখন দেশে ষড়যন্ত্র করছে ঐ বিএনপি জামায়াত। কিন্তু জনগণ তা হতে দিবে না। আগামী নির্বাচনে আবারো ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় এনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করবে জনগণ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশরাফুল হাসান এর সভাপতিত্বে এবং ইসলামাবাদ ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন পাটোয়ারীর উপস্থাপনায়, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা দেন মতলব উত্তর থানার ওসি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মোঃ মহিউদ্দিন, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ইউনিটের কমান্ডার মোজাম্মেল হক, ছেংগারচর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ইউনিটের কমান্ডার আব্দুস ছাত্তার।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, মতলব উত্তর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও গজরা ইউপি চেয়ারম্যান শহিদ উল্লাহ প্রধান, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ শাহজাহান প্রধান, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক নুরুল আমিন বোরহান প্রমুখ। আরো বক্তব্য রাখেন, ইসলামাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের দুইবারের সফল চেয়ারম্যান সাজেদুল হাসান বাবু (বাতেন), বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সুজাতপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মাসুদ পারভেজ।
আলোচনা সভা শেষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবাবর্গের আত্মার শান্তি কামনা করে মিলাদ ও দোয়া করা হয়।