মতলব উত্তরের ফরাজীকান্দি ইউনিয়নের দক্ষিণ সরদারকান্দি গ্রামে ঋণের টাকার জন্য স্থানীয় শালিসে বিক্রিত বসত ঘরটি থানা পুলিশের সহযোগিতায় পুনরায় ফিরে পেয়েছেন অসহায় আলো আক্তার। সোমবার (১১ সসেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ১০ জন শ্রমিক একটানা কাজ করে ঘরটি পূর্বের ভিটিতে স্থাপন করতে সামর্থ্য হয়।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে ঘরের নির্মাণ কাজ ও অসহায় আলো আক্তারের সাথে কথা বলেন মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন। এ সময় ফরাজীকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জি. রেজাউল করিম, উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মিজানুর রহমান, সামজসেবক জমশেদ বেপারী উপস্থিত ছিলেন।
ঘর ফিরে পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন আলো আক্তার। কাঁদতে কাঁদতে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, সাংবাদিক ও পুলিশ ভাইদের প্রতি কৃতজ্ঞ। উনাদের সহযোগিতার কারণেই এই ঘরটি পেয়েছি। পুলিশবাহিনীকে ধন্যবাদের কোন শেষ নেই। ঘরটি উদ্ধারে অনন্য ভূমিকায় ছিলেন এসআই মো. মিজানুর রহমান।
ঘরটি পুনরায় স্থাপন প্রসেঙ্গ এসআই মিজানুর রহমান বলেন, গত ২৯ তারিখে জেলার বেশ কয়েকটি স্থানীয় পত্রিকায় ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে বেশ গুরুত্ব সহকারে “স্থানীয় শালিসে ঋণের টাকার জন্য জোরপূর্বক ঘর বিক্রি” এই হেডলাইনে নিউজটি প্রকাশিত হলে চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপারের দৃষ্টিগোচর হয়। এসপি স্যারের নির্দেশে ও মতলব উত্তর থানার ওসি মহোদয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ঘরটি পূর্বের ভিটিতে স্থাপনের অভিযানে নেমে পরি। আমাদের সকলের সামন্য পরিশ্রমের ফলে অসহায় পরিবারটি ফিরে পেয়েছে বসবাসের ঘরটি। কাজটি করতে গিয়ে সহযোগিতা পেয়েছি স্থানীয় চেয়ারম্যানের। তিনি বলেন, অসহায় ও দুঃস্থ জনগোষ্ঠীর কল্যাণে কাজ করলে জনগণের মাঝে পুলিশের ভাবমূর্তি উন্নত করে, যা দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি পুলিশ সদস্যদের মানসিক প্রশান্তি প্রদান করে এবং তাদের কর্মস্পৃহা বৃদ্ধি করে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ইঞ্জি. রেজাউল করিম বলেন, মানবতার নেত্রী শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। তার নির্দেশনা বাস্তবায়নে আমার পরিষদ কাজ করছে, ভবিষ্যতেও করবে।
এ প্রসঙ্গে মতলব উত্তর ওসি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জানান, পুলিশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি সব সময়ই মানবিক কাজগুলো করে থাকে। অতীতেও করেছে, যা হয়ত এখন আরও বেশি দৃশ্যমান। আমরা সব সময় জনগণের খুব কাছেই থাকতে চাই। সাধারণ জনগনের জানমাল রক্ষা করতে সব সময় তৎপর রয়েছে পুলিশ। তারপরেও অনেক সময় অনাকাঙ্খিত ভাবে দুর্ঘটনা ঘটে যায়। তিনি আইনের প্রতি সককে শ্রদ্ধাশীল ও এধরনের ন্যাক্কারজনক কাজ থেকে সকলকে বিরত থাকতে সকলের প্রতি অনুরোধ জানান।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ আগস্ট সকালে উপজেলার দক্ষিণ সরদারকান্দি গ্রামের রাজ্জাক ঢালীর ছেলে রহমান ও মৃত শরিফ আলী মিজির ছেলে শিবলু ও নবীর সাথে অবৈধ লেনদনের সূত্র ধরেই রহমানের বসত ঘরটি জোরপূর্বক বিক্রি করে দেয় স্থানীয় শালিসগণ। ঘরটি পুনরায় পূর্বের ভিটিতে নির্মাণের সময় শালিস দরবারের সাথে সংশ্লিষ্ট কাউকে দেখা যায়নি।