কিছু বার্মিজ আর কাঠ দিয়ে জোড়াতালি দেয়া ঘরের বেড়া, চালার ছাউনি। নেই কোন টিন। জীর্ণ এ ঘরে স্বামী-স্ত্রী আর সন্তান নিয়ে বসবাস শরীফ হোসেন মিয়াজির। শীতকালে ঘন কুয়াশায় শিশির বিন্দু ফাঁক দিয়ে ঘরে ডুকে ঘরকে বরফের মতো আচ্ছাদিত করে রাখে সারা রাত। হিমেল হাওয়ায় গা ঠাণ্ডায় জমে বরফ হয়ে যায়। এই নিদারুণ কষ্টের মাঝেও নির্ঘুম বা কখনো ঘুমিয়ে কাটে তাদের রাত। কখন সকাল হবে একটু রোদ অথবা লাকড়ি দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে ঠাণ্ডা বরফে জমা শরীরটাকে একটু হালকা গরমের উষ্ণতা দিবে। সেই প্রতীক্ষায় কেটে যায় শীতের রাত।
আর গ্রীষ্মকালের সমস্যাও কম নয়। বৃষ্টি হলে বিভিন্ন ছিদ্র দিয়ে গড়িয়ে পড়ে পানি। তুফান এলে ঘর নরবর করে। আতংক বিরাজ করে সবসময়। কখন জানি বাতাসে ঘর উড়ে যায়, আবার গাছপালা না জানি উপরে পরে। তাই ভয়ে অন্যর ঘরে গিয়ে আশ্রয় নিতে হয়।
তাদের বাড়ি চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নের ব্রাহ্মণচক গ্রামে। শরীফের ৪ শতক ভিটেবাড়ি ছাড়া নেই কোনো সম্বল। বিয়ের পর স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়ায় থাকতো। ভাড়ার টাকা দিতে না পারায় সেখান থেকে চলে আসতে হয়েছে। কিছু লোকের সহযোগিতায় কয়েকটি বার্মিজ আর কাঠ দিয়ে একচালা একটি ঘরে বসবাস করে শরীফ মিয়াজি আর স্ত্রী সন্তান। শরীফ শারীরিকভাবে দুর্বল হওয়ায় কষ্টের কাজ করতে পাড়ে না। যা আয় করে তা দিয়ে ঠিকমত দুমুঠো খাবারও খেতেও পাড়ে না। স্ত্রী অসুস্থ। টাকার জন্য চিকিৎসাও করতে পাড়ছে না। এ নিয়ে খুব কষ্টে দিনাতিপাত করছেন।
শরীফ অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে বলেন, জীবনের ১০টা বছর এমন ভাঙা ঘরে কাটাইছি। এমন ঘরে থাকতে খুবই কষ্ট হয়। একটা ঘর হলে একটু শান্তি নিয়ে মরতে পারবো। স্থানীয় ইউপি সদস্য সিদ্দিকুর রহমান মিয়াজি বলেন, এ পরিবারটি ঘরের জন্য মানবেতর জীবনযাপন করছেন। একটি ঘর হলে ওদের মাথা গোঁজার ঠাঁই হবে।