চাঁদপুর ডিস্ট্রিক্ট পুলিশের ফেসবুক পেজ থেকে নেওয়া তথ্যটি তুলে ধরা হল ‘বাবা মানে বটবৃক্ষ, সন্তানকে গড়ে তোলার জন্য তিনি একাই একটি প্রতিষ্ঠান। বাবা এমন একজন ব্যক্তি, যিনি যেকোনো পরিস্থিতিতে আগলে রাখেন, ছায়ার মতো পাশে থেকে সন্তানকে বড় করে তুলেন। নিজে শত প্রতিকূলতায় জর্জরিত হলেও সন্তানকে সুরক্ষিত রাখতে জীবনের ঝুঁকি নিতেও পিছপা হন না। আবার বৃদ্ধ বয়সে পিতা-মাতার একমাত্র আশ্রয়স্থল সেই সন্তান। পিতা-মাতা শৈশবে সন্তানকে যেভাবে স্নেহের চাদরে আগলে রেখেছেন জীবন সায়াহ্ণে এসে তারাও সন্তানের কাছে সেই ভালোবাসার আশ্রয়ে থাকার কথা। কখনো কখনো দেখা যায়, যে পিতা-মাতা তাকে পৃথিবীর আলোর মুখ দেখিয়েছে, তাদের সাথেই সন্তান হয়ে উঠে রুক্ষ, তাদের উপর চালায় অমানবিক নির্যাতন।
সম্প্রতি চাঁদপুর পৌরসভার ১২-নং ওয়ার্ডে ঘটে এমনই এক হৃদয় বিদারক ঘটনা। চাঁদপুর সদর থানাধীন জনাব মনির হোসেন খান(৭৫) ০৩ কন্যা সন্তানের পিতা। তিনি তার স্ত্রী ও দুই কন্যা সহ নিজ বাসায় বসবাস করেন। গত ০৬ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রীঃ তারিখ সকাল ০৯.০০ ঘটিকার সময় বৃদ্ধ পিতা মনির হোসেন খানকে তার ছোট কন্যা ফাতেমা আক্তার শিল্পী(৪২) গোসল করানোর সময় বিরক্ত হয়ে মারধর করে। বৃদ্ধপিতাকে মারধরের ভিডিওটি চাঁদপুর জেলার পুলিশ সুপার জনাব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বিপিএম, পিপিএম এর দৃষ্টিগোচর হলে তিনি অমানবিক এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চাঁদপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ’কে নির্দেশনা প্রদান করেন । এই প্রেক্ষিতে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ গত ০৭ অক্টোবর ফাতেমা আক্তার শিল্পীকে(৪৫)জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে।
অথচ যে পিতাকে নির্যাতনের জন্য পুলিশ তার কন্যাকে আটক করেন সেই পিতাই আবার থানায় এসে সন্তানের উপর কোন অভিযোগ না রেখে ক্ষমা করে দেন এবং তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য পুলিশকে বারংবার অনুরোধ করেন। পিতার অনুরোধে এবং তার চাওয়াকে সম্মান করে পুলিশ উক্ত কন্যা ফাতেমা আক্তার শিল্পী’র থেকে এই মর্মে অঙ্গিকার নেন যাতে আগামীতে সে তার পিতার উপর কোনো প্রকার নির্যাতন না করে। পরে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ ফাতেমা আক্তার শিল্পীকে তার বয়বৃদ্ধ পিতা মনির হোসেন খান(৭৫) ও মাতা রোকেয়া বেগমের জিম্মায় দেয়া হয়।
পুলিশ সুপার জনাব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বিপিএম, পিপিএম এমন অমানবিক ঘটনা যেন আর না ঘটে, পিতামাতা যেন তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত না হয়, সামাজিক অবক্ষয় রোধে সকলকে সচেতন হওয়া এবং এমন বাবাদের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানান।
চাঁদপুর জেলা পুলিশ সর্বদা অন্যায়ের বিরুদ্ধে এবং ন্যায় ও মানবিকতার পক্ষে কাজ করতে অঙ্গিকারাবদ্ধ।