সনাক-চাঁদপুরের বিশেষ উদ্যোগের আওতায় আবহমানকালের ধারাবাহিকতায় নবান্নের হিমেল অপরাহ্নে ‘সুশাসন, জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতার আলোকে কেমন বাংলাদেশ দেখতে চাই’-শীর্ষক প্রজন্ম ভাবনায় গতকাল ৩০ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে সনাক কার্যালয়ে সর্বস্তরের মানুষের এক উৎসবমূখর মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে তরুণদের স্বদেশ বিষয়ক ভাবনাকে সকলের সামনে তুলে ধরাই এই অনুষ্ঠানের মূল লক্ষ্য। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সনাক চাঁদপুরের সভাপতি ডাঃ পীযূষ কান্তি বড়ুয়া এবং মূখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন সনাকের সাবেক সভাপতি ও সদস্য কাজী শাহাদাত।
সনাক সভাপতি বলেন, সনাক মূলত দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের মঞ্চ হিসেবে কাজ করে। সাধারণ জনগণের সাথে প্রশাসনের সেতুবন্ধন হিসেবে সনাক ভূমিকা পালন করে থাকে। আমরা একটা সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সচেতনতামূলক বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছি। তিনি আরও বলেন, সুশাসন প্রতিষ্ঠা না হলে আমাদের সকল উন্নয়ন ম্লান হয়ে যাবে। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সুশাসন নিশ্চিত হলে এদেশ থেকে দুর্নীতি রোধ করা সম্ভব। তথ্য অধিকার আইন সম্পর্কেও আমাদেরকে জানতে হবে। আমাদের মধ্যে যে সুশাসনের ঘাটতি রয়েছে সেটা পরিবার থেকেও বুঝা যায়। তাই সুশাসন নিশ্চিত করতে হলে সর্বপ্রথম আমাদের পরিবার থেকে শুরু করতে হবে। ছেলে মেয়েতে বৈষম্য পরিবার থেকে সূচনা হয় বলেই আমরা এসমাজ থেকে দুর্নীতি রোধ করতে পারি নাই। আজ নারীরাও পিছিয়ে নেই। সকল ক্ষেত্রে নারীরা আজ অগ্রগামী। তিনি এধরনের একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হওয়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
সনাকের সাবেক সভাপতি কাজী শাহাদাত বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের মুক্তির সংগ্রামের কথা বলেছেন। জাতির জনক এটাই চেয়েছিলেন আমরা যেন সকল ধরনের বঞ্চনা ও অপ্রাপ্তি থেকে মুক্তি পেতে পারি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব সম্পর্কে আমাদেরকে জানতে হবে। আমাদের মূলত সুশাসনটা আগে দরকার। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা সুশাসনের অন্তর্ভূক্ত। তিনি আরও বলেন, সরকারি বেসরকারি যেকোন প্রতিষ্ঠানের সর্বোত্তম সেবা নিশ্চিত করতে হবে, স্বচ্ছতা ও জবাদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে, তথ্য অধিকার সম্পর্কে জানতে হবে, আমাকে আমার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে তাহলেই সুশাসন প্রতিষ্ঠা পাবে। সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হলে একজন নাগরিক হিসেবে সচেতনতার মাধ্যমে আমাকে ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি আরও বলেন, তারুণ্য আমাদেরকে মনে প্রাণে লালন পালন করতে হবে। তিনি বলেন, আমরা আমাদের পরিবার, সমাজ ও কর্মক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবগিতিহিতা নিশ্চিত করতে পারলে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। তাহলেই আমাদের প্রত্যাশা পূরণ হবে।
সনাক সভাপতি ডাঃ পীযূষ কান্তি বড়ুয়ার সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সনাকের সহ-সভাপতি জেসমিন আক্তার। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন, ওয়াই ডাব্লিউসিএ চাঁদপুরের সাধারণ সম্পাদক পাপড়ী বর্মন, হিডো বাংলাদেশ চাঁদপুরের নির্বাহী পরিচালক মোঃ সালাউদ্দিন, সিসিডিএসের নির্বাহী পরিচালক মোঃ সেলিম পাটওয়ারী, বীর মুক্তিযোদ্ধা বাসুদেব মজুমদার, সনাক সদস্য লীলা মজুমদার, চাঁদপুর জেলা কমিউনিটি পুলিশিং-এর সাধারণ সম্পাদক সুফী খায়রুল আলম খোকন, উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মজিবুর রহমান, পুরাণবাজার ডিগ্রি কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হাবিবুর রহমান পাটওয়ারী, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা কল্পনা সরকার, ইনার হুইল ক্লাবের সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ মাহমুদা খানম, পদক্ষেপ বাংলাদেশ চাঁদপুরের সভাপতি মুক্তা পীযূষ, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ড. কাজী হাশেম, আব্দুল আউয়াল গাজী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কানিজ ফাতেমা, সদর উপজেলা ভূমি অফিস কেন্দ্রিক এসিজি গ্রুপের সমন্বয়ক মোঃ উজ্জ্বল হোসাইন, প্যাক্টা প্রকল্প সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন টিআইবি’র এরিয়া কো-অর্ডিনেটর মোঃ মাসুদ রানা, ইয়েস গ্রুপের দলনেতা নাঈমা ফেরদৌসি প্রমুখ। বক্তারা বলেন, আমরা দুর্নীতিমুক্ত একটি বাংলাদেশ চাই। আমরা চাই সকল ক্ষেত্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত হোক। তারা আরও বলেন, আমি যেমন নিজেকে ভালোবাসি, নিজের দেশকেও তেমনি ভালোবাসতে হবে। আমরা সকলেই একটি সুন্দর বাংলাদেশ চাই। আমরা এমন বাংলাদেশ চাই আমার সামনে কোন অন্যায় হলে আমরা যেন প্রতিবাদ করতে পারি। আমাদেরকে আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হবে। এমন একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করার জন্য বক্তারা সনাক, চাঁদপুরকে ধন্যবাদ জানান।