দেশের ৭০ শতাংশ মানুষ নৌকায় ভোট দেওয়ার জন্য তৈরি হয়ে আছেন বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, আগামী ৭ জানুয়ারি ফাইনাল খেলা হবে। ওই দিন ১ হাজার ৮৯৬ জন খেলবেন। আর বিএনপি ২৮ তারিখ (গত ২৮ অক্টোবর) লাল কার্ড খেয়ে এই খেলা থেকে বিদায় নিয়েছে।
বিজয় দিবস উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার বিকেলে আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিজয় শোভাযাত্রায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের সামনের সড়কে শোভাযাত্রার জন্য মঞ্চ তৈরি করা হয়। সেখানেই বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
এর আগে বেলা দেড়টা থেকে শত শত পিকআপ ভ্যানে করে বিপুলসংখ্যক নেতা–কর্মী ওই এলাকার সড়কে এসে জড়ো হতে থাকেন। ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য শেষে বিকেল চারটায় শোভাযাত্রা বের করেছে আওয়ামী লীগ। ঢোলবাদ্য বাজিয়ে কয়েক হাজার নেতা–কর্মী বিজয় শোভাযাত্রায় অংশ নেন। সেখানে মাইকে ‘জয় বাংলা জিতবে এবার নৌকা’ গান বাজানো হয়। ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবন গিয়ে বিজয় শোভাযাত্রা শেষ হওয়ার কথা।
শোভাযাত্রা–পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘খেলা হবে। ছাড়াছাড়ি নেই। খেলা চলবে। ৭ তারিখে ফাইনাল খেলা হবে। বিএনপি নাই! এক দফা ভুয়া। বিএনপি ভুয়া। ২৮ দফা ভুয়া। ২৮ তারিখ ভুয়া। চাপে পড়ে গেছে। ফাইনাল খেলবে কে? ১ হাজার ৮৯৬ জনের প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে দল আছে ২৭টা।’
নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না যারা বলে, তারা ভুয়া বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘ফাইনাল হবে ৭ তারিখে। ২৮ তারিখ লাল কার্ড খেয়ে বিএনপি বিদায় নিয়েছে। বিএনপি ভুয়া। ধানের শীষ ভুয়া। বিএনপির নেতা নাই। আন্দোলন করবে কাকে দিয়ে? নির্বাচন করবে কাকে দিয়ে?
সকালে ঢাকার তেজগাঁওয়ে ট্রেনে আগুনে চারজন নিহত হওয়ার বিষয়টিকে গাজায় নারী ও শিশু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তুলনা করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, যারা রেলে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করেছে, তাদের ক্ষমা নেই।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি দাবি করছে, তাদের ২১ হাজার নেতা–কর্মী নাকি জেলে আছে। চ্যালেঞ্জ করছি, জেলে আছে ১১ জন। আজ জামিন পেয়েছে দুই হাজার জন। ২১ হাজার ভুয়া, বিএনপিও ভুয়া।’
বিএনপির চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনের কঠোর সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, অন্ধকার থেকে বক্তৃতা করে। ছবি তোলে। কুয়াশার মধ্যে ১০-১২ জন মিছিল করে। এটা নাকি আন্দোলন!
বিএনপির আন্দোলন নিয়ে ব্যঙ্গ করে ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা আরও বলেন, বিএনপি এ বছর আর আন্দোলন করবে না। আগামী বছর শুরু হবে। রমজানের ঈদের পর আন্দোলন হবে। কোরবানির ঈদের পর আন্দোলন হবে। এরপর আবার পাঁচ বছর পর আন্দোলন করবে! বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে তিনি বলেন, ‘জেলে যেতে ভয় পায়। ভুয়া। তারেকের কথায় আর আন্দোলন হবে না।’
ওবায়দুল কাদের দাবি করেন, বিদেশি সমীক্ষা বলছে, ৭০ শতাংশ লোক শেখ হাসিনাকে ভোট দেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। যারা ভোটকেন্দ্রে আসতে বাধা দেবে, তাদের মনে রাখতে হবে, জনগণ নির্বাচনমুখী, তারাই প্রতিহত করবে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা-৮ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ঢাকা-১৬ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ইলিয়াস মোল্লা, ঢাকা-১১ আসনে নৌকার প্রার্থী ওয়াকিল উদ্দিন, ঢাকা-১০ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ এবং ঢাকা-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সানজিদা খানম।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, যুবলীগের সভাপতি শেখ ফজলে শামস পরশ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন প্রমুখ।