প্রচার প্রচারণা শেষ হয়ে গেলেও কিছু সংখ্যক ভোটাররা এখন নির্বাচনে পাশ ফেলের চুল চেরা বিশ্লেষন নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পড়েছেন। অন্যদিকে নির্বাচনে না আসা বিএনপির নেতারা ভোটার ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ার জন্য সাধারণ ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে ও লিফলেট বিতরণ করছে।
অন্যদিকে বিএনপির কিছু নেতা কর্মীরা- সামাজিক ভাবে অনেকেই জড়িয়ে পড়েছেন এই নির্বাচনে।
সারা দেশের ন্যায় চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে রাত পোহালেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে বহু কাঙ্খিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনকে সুষ্টভাবে সম্পন্ন করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সুষ্ট নির্বাচন করতে ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, রেব, সেনাবাহিনী বিজিবি ও আনসার সদস্যসহ সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা। নির্বাচনে ফরিদগঞ্জ কিছু প্রার্থীদের পাশাপাশি কিছু কিছু ভোটারদের মাঝে উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে।
এই আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীসহ মোট ৮ জন নির্বাচন করছেন।
তারা হলেন, আওয়ামী লীগ প্রার্থী মুহম্মদ শফিকুর রহমান (প্রতীক নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক এমপি ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়া (প্রতীক ঈগল), স্বতন্ত্র প্রার্থী সিআইপি জালাল আহমেদ (প্রতীক ট্রাক), জাতীয় পার্টির প্রার্থী শেখ সাজ্জাদ রশিদ সুমন (প্রতীক লাঙ্গল), বিএনএম প্রার্থী ড. মোহাম্মদ শাহজাহান (প্রতীক নোঙ্গর), তৃণমূল বিএনপি প্রার্থী আব্দুল কাদের তালুকদার (প্রতীক সোনালি অঁাশ), তরিকত ফেডারেশন প্রার্থী বাকী বিল্লাহ মিশকাত (প্রতীক ফুলের মালা) ও এনপিপি প্রার্থী আব্দুল গণি (প্রতীক আম)।
এই নির্বাচনী এলাকায় ১টি পৌর সভা ও ১৫টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এই আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৬৯ হাজার ১২৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৯২ হাজার ৭৬০ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৭৬ হাজার ৩৬৮ জন।
এই উপজেলাযর ১৬নং( রূপসা দক্ষিণ) ইউনিয়নের নারীরা এক পীরের নির্দেশে দেশ স্বাধীনের পর থেকে ভোট দেওয়া থেকে বিরত রয়েছে।
গত ২০১৮ সালের ভোটার সংখ্যা থেকে জানা যায়, উপজেলায় ২০২৪ সালের ভোটারের তথ্য অনুযায়ী ৫৯ হাজার ৩৬০ জন ভোট বেড়েছে।
নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে বড় ধরনের লড়াইয়ের আভাস দিচ্ছে।
দুই হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থী। অন্যদিকে কিংস পার্টি খ্যাত বিএনএম মহাসচিব তার নিজের আসনে খেলা দেখাতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
সরেজমিন ঘুরে ভোটারদের সাথে কথা বলে দেখা গেছে, বিএনপি নির্বাচনে না থাকায় সাধারণ ভোটাররা মাঠে থাকা মূল প্রার্থীদের নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন। বিগত দিনে দলের প্রতি, এলাকার উন্নয়নে কার কী ভূমিকা রয়েছে তা নিয়ে চলছে চায়ের টেবিলে ঝড়। পাশাপাশি গত দুই নির্বাচনে ভোট দিতে না পারায় এবার ভোট দিতে পারবেন কিনা, তাও জানতে চাইছেন অনেকে। বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগের মূলধারার লোকজনের প্রায় অধিকাংশই আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিপরীতে হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভূঁইয়ার প্রতি ঝুঁকে রয়েছেন। তার জন্যে কাজ করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ বিশাল বর্তমান ও পদদারি ও নেতাকর্মীরা ।
বিপরীত দিকে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সাথে রয়েছেন নৌকার প্রশ্নে আপসহীন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, পৌর মেয়র যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটওয়ারী এবং সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও চঁাদপুর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডঃ জাহিদুল ইসলাম রোমান ও তঁার অনুসারীরা। অপর প্রার্থী সিআইপি জালাল আহমেদের পক্ষেও রয়েছেন আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি লোকমান তালুকদারসহ নেতা-কর্মীরা।
দীর্ঘদিনের সিআইপি জালাল আহমেদের দান-অনুদানের কারণে উপজেলাজুড়েই একটি বড় ভোটব্যাংক সৃষ্টি হয়েছে। ফলে নৌকার সাথে ঈগল ও ট্রাক প্রতীকের ত্রিমুখী লড়াইয়ের আভাস মিলছে নির্বাচনী মাঠে ভোটারদের মাঝে।
এদিকে নির্বাচনী প্রচারণায় জাতীয় পার্টির প্রার্থীর তুলনায় অনেক এগিয়ে থাকা নোঙ্গর প্রতীক নিয়ে মাঠে ভালোভাবেই রয়েছেন বিএনএম প্রার্থী ও দলের মহাসচিব ড. মোহাম্মদ শাহজাহান। তাঁর বিশ্বাস, আওয়ামী লীগ বিরোধীরা এ প্রতীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে তাকে।