সৎ মায়ের প্ররোচনায় বাবা সন্তানকে সম্পত্তি দিয়েও প্রতারনা করে ওই সম্পত্তি অন্যত্র বিক্রি করে দেওয়ায় স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে বিচারের দাবীতে গ্রামের মোড়লদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও বিচার না পেয়ে অবশেষে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন ছেলে মুরাদ। এমনি এক অভিযোগ পাওয়া গেছে কচুয়া পৌরসভার করইশ গ্রামে। গত ২৭ মার্চ ছেলে মুরাদ হোসেন তার বাবা হাজী ছিদ্দিকুর রহমানকে বিবাদী করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে, মুরাদের বয়স যখন ১০ বছর তখন তার মা মনোয়ারা বেগম মারা যায়। বাবা হাজী ছিদ্দিকুর রহমান দ্বিতীয় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। এলাকাবাসী মুরাদ হোসেনের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তার বাবার ছিদ্দিকুর রহমানের কাছ থেকে ২ শতক সম্পত্তি দলিলমূলে রেজিস্ট্রি করে দেয় মুরাদ হোসেনের নামে। পরবর্তীতে তার পিতা ছিদ্দিকুর রহমান গোপনে অন্যত্র উক্ত সম্পত্তি বিক্রি করে দিয়েছে।
এ ব্যাপারে মুরাদ হোসেন জানান, আমার মায়ের মৃত্যুর পর বাবা ও সৎ মায়ের অত্যাচার ও অবহেলায় যুদ্ধ করে খেয়ে না খেয়ে এখন পর্যন্ত বেঁচে আছি। ওই সময়ে আমার উপর তাদের অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় গ্রামবাসী আমার বাবাকে বাধ্যকরে আমার নামে ২ শতক সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করে দেয়ার জন্য। ২০১৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর বাবা হাজী ছিদ্দিকুর রহমান সাবেক ৮৩নং হালে ৯৯নং করইশ মৌজার মধ্যে সাবেক ১২৩নং বিএস ৪২৫নং খারিজি খতিয়ানে ১২৩/১নং দাগ সাবেক ২৩৭ দাগে হালে ১৭৫২ দাগে নাল মোয়াজ ৪৮ শতক সম্পত্তির আন্দোরে ২৫ তদান্দরে নাল মোয়াজ ৪শতক মুরাদ হোসেন এবং তার ভাই মুজাম্মেল হোসেন জনির নামে রেজিস্ট্রি করে দেয়।
তিনি আরো জানান, ২০২৩ সালে আমি উক্ত সম্পত্তিতে টিন দিয়ে বেড়া দিতে যাই তখন এলাকার চাচা আব্দুর রশিদ এবং আলমের কাছ থেকে শুনতে পাই আমার বাবা এই সম্পত্তি করইশ গ্রামের খোকনের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। এ কথা শুনে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। পরষ্পর শুনতে পারি আমার বাবা আমার স্বাক্ষর জাল করে উক্ত সম্পত্তি কাউছার আহমেদ (খোকন) এর কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। বিষয়টি অবগত হয়ে গ্রাম্য মাতাব্বরদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে কোন সুরাহ না পেয়ে সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর অভিযোগ করি। অভিযোগের সংবাদ পেয়ে কাউছার আহমেদ খোকন, আলম, জাহাঙ্গীর মিয়া দলবল নিয়ে শনিবার বিকালে আমাকে মারধর করে জমির সাইনবোর্ড ও বাউন্ডারি ভাংচুর করে।
অভিযুক্ত হাজী ছিদ্দিকুর রহমান জানান, আমার প্রথম সংসারের মুরাদকে ২শত জমি রেজিস্ট্রি করে দিয়েছি সত্য। কয়েক বছর পর মুরাদ আমার কাছে ২ শতক জমি বিক্রি করে দেয়। আমি পরবর্তীতে কাউছার আহমেদ খোকনের কাছে এ সম্পত্তি বিক্রি করে দিয়েছি।
কাউছার আহমেদ খোকন জানান, আমি ছিদ্দিকুর রহমানের কাছ থেকে ২শতক সম্পত্তি ক্রয় করেছি। পরবর্তীকালে জানতে পারি ছিদ্দিকুর রহমান তার ছেলেকে এ ২ শতক জমি রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার পর ছেলে মুরাদ পুনরায় তার বাবাকে এ ২ শতক জমি ফেরত দিয়েছে। তারপর আমি এই জমি ক্রয় করেছি।
এ ব্যাপারে আলম, জাহাঙ্গীর মিয়া জানান, আমাদের আত্মীয়ের ক্রয়কৃত জমি আমরা দখলে নিয়েছি। মুরাদ হোসেনের উপর হামলার প্রশ্নই আসে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এহসান মুরাদ জানান, মুরাদ হোসেন কর্তৃক সম্পত্তিগত সমস্যার একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। দুই পক্ষকে ডেকে শুনানী করা হবে।