প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ তাদের বৈশ্বিক কর্মসূচিতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে সমন্বয় করতে ‘বাংলাদেশ জলবায়ু উন্নয়ন অংশীদারিত্ব’ (বিসিডিপি) গঠন করেছে।
তিনি বলেন, এই বিসিডিপি বিভিন্ন অংশীদার, উন্নত দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে কাজ করবে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যাগুলো প্রশমিত করতে বিভিন্ন কর্মসূচিতে তহবিল জোগান দেবে।
সোমবার (২২ এপ্রিল) জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশনের (ইউএনএফসিসিসি) নির্বাহী সচিব সাইমন স্টিলের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের (বিআইসিসি) দ্বিপক্ষীয় আলোচনা কক্ষে বৈঠককালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইংয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশ দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি গ্রহণ করছে বলে উল্লেখ করেন। তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা এবং জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনাসহ (ন্যাপ) বাংলাদেশের বিভিন্ন অভিযোজন ও প্রশমন কর্মসূচির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের কারণে বাংলাদেশ প্রায়ই বিভিন্ন ধরনের ঘূর্ণিঝড়, অতিবৃষ্টি ও তাপপ্রবাহের সম্মুখীন হয়।
তিনি বলেন, আমরা বনায়নের জন্য সামাজিক আন্দোলনকে উৎসাহিত করছি, ৮৪ হাজার স্বেচ্ছাসেবক তৈরি করেছি এবং বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করছি। বাংলাদেশের গবেষকরা লবণাক্ত, বন্যা ও খরা সহিষ্ণু ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন।
আগামী জুন থেকে বর্ষাকালে সারা দেশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি শুরু হবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ এ আন্দোলনের পথিকৃৎ।
ইউএনএফসিসিসির নির্বাহী সচিব নিজ উদ্যোগে জলবায়ু তহবিল গঠনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ শুধু জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় কাজ করে না, বরং অভিযোজন ও প্রশমনের জন্য বিভিন্ন ধরনের সামাজিক কর্মসূচি গ্রহণ করছে। এই বিষয়গুলো স্পষ্টতই সমগ্র বিশ্বের জন্য উদাহরণ বলে মত দেন সাইমন স্টিল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘসময় ধরে দায়িত্বে থাকা নেত্রী উল্লেখ করে বলেন, তিনি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যা নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যা সমাধানের আন্দোলন ত্বরান্বিত করতে এই ফোরামগুলোতে আপনি জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যাগুলোর বিরূপ প্রভাব মোকাবিলার জন্য বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারেন।
ইউএনএফসিসিসির নির্বাহী সচিব বলেন, অন্য দেশগুলো তাদের নিজস্ব অভিযোজন ও প্রশমন পরিকল্পনা প্রণয়নে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশের এ অভিজ্ঞতাগুলো কাজে লাগাতে পারে। তিনি আরও করেন, বাংলাদেশ শুধু তার নিজের দেশেই নয়, সারা বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে তার প্রভাব রেখে যাচ্ছে।
এসময় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, মুখ্য সচিব মোহাম্মদ তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া, বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গুয়েন লুইস এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।