ইন্দোনেশিয়ার মাউন্ট রুয়াং আগ্নেয়গিরিতে মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বেশ কয়েকবার অগ্ন্যুৎপাত হয়েছে। এ কারণে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ এবং সুনামির ঝুঁকির কারণে হাজার হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় আগ্নেয়গিরি বিষয়ক সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, অগ্ন্যুৎপাতের ঝুঁকি এখনো শেষ হয়নি। ওই এলাকা থেকে এরই মধ্যে ছয় হাজারের বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
রুয়াং আগ্নেয়গিরিটি ইন্দোনেশিয়ার উত্তর সুলাওয়েসি প্রদেশে অবস্থিত। স্থানীয় সময় সোমবার দিনগত রাত ১টা ১৫ মিনিটে সেখানে প্রথমবার অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা ঘটে। এরপর সকালে আরও দু’বার অগ্ন্যুৎপাত হয়।
অগ্ন্যুৎপাতের ফলে আকাশে পাঁচ কিলোমিটারেরও বেশি জায়গাজুড়ে ছাইয়ের মেঘ তৈরি হয়েছে। আর নিচে রয়েছে জ্বলন্ত লাভার উত্তপ্ত স্রোত।
জাতীয় দুর্যোগ সংস্থা বিপিএনবির মুখপাত্র আব্দুল মুহারী এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, প্রাকৃতিক এই দুর্যোগের কারণে রুয়াংয়ের আশপাশের এলাকা থেকে ১২ হাজার মানুষকে স্থানান্তর করার প্রয়োজন হতে পারে।
তিনি জানান, বর্তমানে স্থানীয় দুর্যোগ প্রশমন সংস্থা, সামরিক বাহিনী ও পুলিশ বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে কাজ করছে।
আগ্নেয়গিরি সংস্থার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অগ্ন্যুৎপাতের ধ্বংসাবশেষ সাগরে পড়ে সুনামির আশঙ্কা রয়েছে। উত্তপ্ত শিলা ও ছাইয়ের মেঘ থেকেও ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি রয়েছে। এ কারণে রুয়াংয়ের চারপাশে সাত কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আব্দুল মুহারী বলেন, সুনামি সতর্কতার কারণে প্রতিবেশী তাগুলান্দাং দ্বীপ থেকে উত্তরে সিয়াউ দ্বীপে হাজার হাজার মানুষকে সরিয়ে নিতে দুটি জাহাজ পাঠানো হয়েছে।
এসময় তিনি ১৮৭১ সালের একটি দুর্যোগের কথা উল্লেখ করেন, যাতে প্রায় ৪০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন। অগ্ন্যুৎপাতের পর বিশাল ধ্বংসাবশেষ সাগরে পড়ে তৈরি হওয়া সুনামিতে মারা যান তারা।
২০১৮ সালেও একই ধরনের ট্রাজেডির সম্মুখীন হয়েছিল ইন্দোনেশিয়া। সেসময় জাভা এবং সুমাত্রা দ্বীপপুঞ্জের মধ্যে মাউন্ট আনাক ক্রাকাতোয়া একটি বড় অগ্ন্যুৎপাতের পর আগ্নেয়গিরির বিশাল অংশ সাগরে ধসে পড়ে। এতে সৃষ্ট সুনামিতে চার শতাধিক মানুষ মারা যান, আহত হন কয়েক হাজার।