চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে গৃহবধূ বিথি বেগম(২২)এর রহস্যজনক আত্মহত্যা। এলাকাবাসী ও মৃতের পারিবারের দাবি বিথিকে হত্যা করা হয়েছে।
শুক্রবার রাতে উপজেলার গুপ্টি পূর্ব ইউনিয়নের ঘনিয়া এলাকার পাঠান বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। বিথি পাঠান বাড়ির ইকবাল হোসেন (সজিবের) স্ত্রী। তাদের ৬ বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বিথির স্বামী ইকবাল হোসেন চাঁদপুর সমাজসেবা অফিসে চাকুরী করে।
শনিবার (৪ মে) সকালে স্থানীয় লোকজন বিথি নামে এক সন্তানের জননী আত্মহত্যা করেছে বলে থানায় খবর দেয়। আত্মহত্যার সংবাদ পেয়ে ফরিদগঞ্জ থানার এসআই জাহাঙ্গীর আলম সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থল গিয়ে মৃত দেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।
জানা যায়, ৭ বছর পূর্বে বিথি ও ইকবাল ভালোবেসে বিয়ে করেন। তারা চাচাতো জেঠাতো ভাই-বোন ছিল। ইকবাল ও বিথি পালিয়ে বিয়ে করার পর থেকেই তাদের পরিবারের মধ্যে বিভিন্ন সময় ঝগড়া লেগেই থাকতো বলে দাবি করেন বিথির বাবা। তিন মেয়ের মধ্যে বিথি সবার বড়।
বিথির বাবা আবুল বাশার চাঁদপুর টাইমসকে জানান, আমার মেয়ের জামাই ইকবাল হোসেন সজিব তার বাবা সফিকুল ইসলাম, মা সাহিদা বেগম ও বোন সাহিনুর আক্তার এবং ভাই সাইদুল ইসলাম আমার মেয়েকে মেরে ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রেখেছে। আমার মেয়েকে তার শ্বশুর গত তিন বছর পূর্বে গলায় পাড়া দিয়ে মেরে ফেলতে চেয়েছিল। এরপর তার শাশুড়ি ও বাশুর এবং ননদ আমার মেয়েকে মারধর করেছে। এইসব ঘটনায় স্থানীয় ভাবে ইউপি চেয়ারম্যানসহ সমাধান করে দেয়। তারা অবশেষে আমার মেয়েকে মেরেই ফেলল! আমি তাদের বিচার চাই। আমার মেয়েকে হত্যার দায়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবো।
বিথির স্বামী ইকবাল হোসেন সজিব চাঁদপুর টাইমসকে জানান, আমার স্ত্রী গত প্রাইমারি নিয়োগ পরীক্ষায় ফেল করার পর তার বাবা মা বকাঝকা করেন। এইসবসহ পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়ে বিথির সাথে কথাকাটাকাটি হতো। আবার সব ঠিক হয়ে যেত। আমি গত মঙ্গলবার অফিসের কাজে ঢাকায় যাই। বিথির সাথে আমার প্রায় প্রতিদিনই কথা হতো। গতকাল শুক্রবার রাতে ১টা ৪০ মিনিটের সময় আমার মোবাইল ফোনে এসএমএস পাঠায় বিথি। আমি তখন ঘুমে ছিলাম। ঘুম থেকে উঠি সকাল ৮ টা ৪৫ মিনিটে। এরপর মোবাইলে দেখি বিথি লিখেছে (এই মুহূর্ত থেকে তোকে আমি মুক্ত করে দিলাম চিরতরে, আল্লাহ হাফেজ) এরপর আমি বাড়িতে ফোন করলে জানতে পারি বিথি আত্মহত্যা করেছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ তুহিন হোসেন জানান, সকল সাড়ে আটটায় ইকবালের বাড়ি থেকে ফোন করে জানায় তার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে। শুনেই আমি থানায় ফোন দিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। গিয়ে দেখি ঘরের দরজা খোলা। ঘরের ভিতরে সিলিং ফ্যানের পাখার সাথে ওড়নায় ঝুলে আছে ইকবালের স্ত্রী বিথি। তার দুই হাতে কাটার দাগ আছে। বাড়ির আশপাশের লোকজন এই আত্মহত্যার ঘটনাটি রহস্যজনক বলেছে।
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ সাইদুল ইসলাম জানান, গৃহবধুর আত্মহত্যার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মৃত দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোন ধরনের লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োযনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এদিকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিথির পরিবারের লোকজন মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আত্মহত্যা কারী বিথির স্বামী চাঁদপুর সমাজসেবা অফিসের হিসাব বিথি এক সন্তানের জননী পিতা আবুল বাশার সাং ঘনিয়া, ৫ নং গুপ্টি স্বামী ইকবাল হোসেন সজিব, উপজেলা সমাজ কল্যাণ অফিস হিসাব রক্ষক।