নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই ইউপি থেকে কালিগঞ্জ বাজার পর্যন্ত চার কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের দুদিন পরেই কার্পেটিং (পিচ ঢালাই) উঠে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ধুলামিশ্রিত পাথর, পরিমাণে কম ও নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহার করায় কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
এ নিয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কর্তৃপক্ষসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি। প্রতিবাদ করায় উল্টো তাদের নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ দিয়ে পুলিশি হয়রানি করা হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।স্থানীয়রা বলেন, ছয় মাস আগে রাস্তাটির সংস্কারকাজ শুরু হয়। সোমবার রাস্তাটির কার্পেটিং শুরু করেন ঠিকাদার। কিন্তু বুধবার থেকে সে কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। হাত দিয়েই তুলে ফেলা যাচ্ছে পিচ। ঠিকাদার এলজিইডির প্রকৌশলীদের সঙ্গে মিলে নিম্নমানের ও কম সামগ্রী দিয়ে রাস্তাটি সংস্কার করছেন। ধুলামিশ্রিত স্থানীয় পাথর, নিম্নমানের বিটুমিন ব্যবহারের সময় স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলেও কোনো লাভ হয়নি। ঠিকাদার রাস্তার অনেক স্থানে খোয়ার পরিবর্তে মাটিও ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ তাদের।
এলজিইডি সূত্র জানায়, এক কোটি ৪৩ লাখ টাকা ব্যয়ে চার হাজার ৩০০ মিটার সড়কটির সংস্কারকাজ পেয়েছেন জামান ট্রেডার্স নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে কাজটি করছেন নাসিমুল একরাম নামের সাব-ঠিকাদার।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, পুরোনো খোয়া ও কার্পেটিং ভালোভাবে না তুলেই আমদানি করা নিম্নমানের বিটুমিন দিয়ে রাস্তাটি কার্পেটিং করছেন ঠিকাদার। নির্মাণকাজে নিম্নমানের পাথর ও তিন থেকে ৬ ইঞ্চি বড় ইটের টুকরা ব্যবহার করা হয়েছে। এ ছাড়া দরপত্রে সড়কের প্রস্থ ১০ ফুট থাকলেও করা হচ্ছে ৯ ফুট ৯ ইঞ্চি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মামুন ইসলামসহ অন্তত ২০ জন বাসিন্দা বলেন, রাস্তা সংস্কারকাজে নিম্নমানের এবং কম পরিমাণে খোয়া, পাথর ও বিটুমিন ব্যবহারের প্রতিবাদ করলে এলাকাবাসীকে গালিগালাজ ও হুমকি দিয়েছেন ঠিকাদারের লোকজন। আগামী দুই-চার মাসের মধ্যেই এ রাস্তার কার্পেটিং পুরোপুরি উঠে যাবে।
নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করে সাব-ঠিকাদার নাসিমুল একরাম বলেন, তাপমাত্রার কারণে পিচ জমাট বাঁধতে সময় লাগছে। আমি তো সেখানে যাই না। এলজিইডির লোকজনের উপস্থিতিতে রাস্তা কার্পেটিং ও সংস্কার করা হয়। থানা ইঞ্জিনিয়ার (উপজেলা প্রকৌশলী) ও অফিসের লোক সিদ্দিককে (উপসহকারী প্রকৌশলী) বলে দিয়েছি আপনারা দেখে নিয়ে কাজ করেন। আমদানি করা বিটুমিন ব্যবহারের বিষয়ে তিনি বলেন, দেশীয় বিটুমিন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী শফিউল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, কাজে তো অনিয়ম আছেই। এ জন্য কী আমরা ঠিকাদারের সঙ্গে মারামারি করব? অনিয়মের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। তারা নির্দেশনা দিলে আমরা পদক্ষেপ নেব।
জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী ফিরোজ হাসান জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করা করা হবে। কাজে অনিয়ম হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।