আট বছর আগে পুরান ঢাকায় জামিল হোসেন (৩২) নামের এক ব্যবসায়ীকে গলা কেটে ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করেন নিহতের বোন শাহিদা পারভীন। মামলাটি সাক্ষ্যের পর্যায়ে আসলে নিহতের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকের সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আটকে ছিল। সাক্ষ্য দিতে আদালত থেকে কয়েক দফা সমন পাঠানো হয়।
পরে জানা যায়, স্বামীর চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তৎকালীন চিকিৎসক ডা. এলিজা খান। পরে বিচারক সিদ্ধান্ত নেন ভার্চুয়ালি তার সাক্ষ্য গ্রহণ করবেন। আদালতের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সিঙ্গাপুর থেকে ভার্চুয়ালি সাক্ষ্য দিলেন এলিজা খান।
সরেজমিনে দেখা যায়, এজলাসে দুটি ফোনের মাধ্যমে ভার্চুয়াল এ সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।একটি ফোনে বিচারক অপর একটি ফোনে আসামি পক্ষের আইনজীবী আর সিঙ্গাপুর থেকে সাক্ষী এলিজা ভিডিও কলের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন। তবে রাষ্ট্রপক্ষে কোনও কৌশুলিকে উপস্থিত পাওয়া যায়নি। বুধবার (২৯ মে) ঢাকার ৬ষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ মোরশেদ আলমের আদালত তার সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, আদালত থেকে ডা. এলিজাকে সাক্ষ্য দিতে সমন পাঠানো হয়। পরে জানানো হয়, স্বামীসহ তিনি অনেকদিন সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন। দেশে ফিরতে আরও সময় লাগবে। বিচারক সিদ্ধান্ত নেন ভার্চুয়ালি সাক্ষ্য নিবেন। আজ বিচারক ওই চিকিৎসকের জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এরপর আমরা তাকে জেরা করি।
মামলা সূত্রে জানা যায়, নিহত জামিলের সোয়ারীঘাটে গাম ও স্কচটেপের কারখানা ছিল। ওয়াটার ওয়ার্কস রোডের ৫৯ নম্বর বাসার দ্বিতীয় তলায় স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন তিনি। জুয়েল রানা ওরফে তানভীর জামিলের ভায়রা ভাই। তার সাথে পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে জামিলের স্ত্রী মৌসুমি জামিলের। পরকীয়ার জের ধরে ২০১৬ সালের ২ মে জুয়েল, মৌসুমিসহ অন্যরা জামিলকে গলা কেটে হত্যা করেন।
এ ঘটনায় পরদিন জামিলের বড় বোন শাহিদা পারভীন চকবাজার থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০১৭ সালের ৩১ অক্টোবর ৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর পুলিশ পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম।
আসামিরা হলেন- জামিলের স্ত্রী মৌসুমি জামিল, ভায়রা জুয়েল রানা ওরফে তানভীর, এমরান হাসান ওরফে ইমরান, এরফান, শফিকুল আলম ও মো. ইউনূস।