প্রায় দুই যুগ আগে দেশে প্রথম ডেঙ্গুর প্রকোপ লক্ষ্য করা হয়। ২০২৩ সালে ডেঙ্গুর প্রকোপ অতীতের সব রেকর্ড ভাঙে। তাই এডিস মশা নিধনে বর্তমান কর্মপদ্ধতির ব্যর্থতা তুলে ধরে বিকল্প পদ্ধতি ভাবার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
রোববার (১৪ জুলাই) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) ও বারসিক আয়োজিত ‘ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার কারণ অনুসন্ধান ও করণীয় নির্ধারণ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এ পরামর্শ দেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক ব্যাধি শাখার সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, এডিস মশাকে ধোঁয়া ও মেডিসিন দিয়ে নিধন করার চিন্তা করলে হবে না। এডিস ও কিউলেক্স মশা এক নয়। এডিস মশা নিধনে সুপরিকল্পিতভাবে কাজ করতে হবে। অথচ এটি নির্ধারণে সিটি করপোরেশনের পর্যাপ্ত কিট তত্ত্ববিদ নেই। স্বাস্থ্য বিভাগের নিয়মিত ল্যাব নেই। এভাবে মশা নিধন সম্ভব নয়।
রোগী শনাক্তের উপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ডেঙ্গু শহর ছেড়ে গ্রাম পর্যন্ত ছড়িয়ে পরেছে। অথচ সেখানে শনাক্ত ও চিকিৎসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থাপনা নেই। এ অবস্থায় ম্যালেরিয়ার মতো রেপিড টেস্টের মাধ্যমে গ্রামে ডেঙ্গু শনাক্তকরণের ব্যবস্থা করতে হবে। সাম্প্রতিক যে গাইডলাইন প্রণয়ন করা হয়েছে তা প্রতিরোধমূলক নয়।
কীটতত্ত্ববিদ অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, এডিস মশা এখন আর নগরের মশা নেই। সে এখন তার রাজত্ব সারাদেশে ছড়িয়েছে। এজন্য পরিবেশগত ব্যবস্থাপনা করতে হবে। অন্য প্রাণী দিয়ে তা নিধন করতে হবে। কিন্তু আমরা তা ধ্বংস করে দিয়েছি। এখন ফড়িং খুঁজে পাওয়া দায়। ফলে আমরা মশা মারতে কীটনাশক ব্যবহার করেছি। এটা ক্ষতিকর।
ডেঙ্গুর আর্থিক ক্ষতির তথ্য তুলে ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রুমানা হক বলেন, ডেঙ্গু চিকিৎসায় জটিল অবস্থায় আমরা হাসপাতালে ভর্তি হই।আমাদের টেস্ট ও চিকিৎসা বাবদ ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা ব্যয় হয়। আক্রান্ত ব্যক্তি এসময় কাজে যেতে পারেন না। ফলে এখানেও কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। আবার সরকারও এখানে অনেক ভর্তুকি দিচ্ছে। যা সামগ্রিকভাবে অর্থনৈতিক ক্ষতি।পরিবেশ বিশেষজ্ঞ পাভেল মাহমুদ বলেন, রাষ্ট্রের অবহেলার কারণে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা পরিবেশ ধ্বংস করেছি। পরিবেশগত ব্যবস্থাপনায় জোর দিতে হবে।