নওগাঁয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে পুলিশ-সাংবাদিকসহ অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন।
শনিবার (৩ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শহরের সরিষাহাটির মোড় এলাকায় সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে শহরের কাজীর মোড় এলাকায় দুপুর ১২টার দিকে জড়ো হয় শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে শহরের মুক্তির দিকে এগোতে থাকে। মিছিলটি মুক্তির মোড় হয়ে সরিষাহাটির মোড়ে আওয়ামী লীগের পার্টি অফিসের সামনে পৌঁছালে পার্টি অফিসে অবস্থানরত ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুঁড়তে শুরু করে। এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
একপর্যায়ে পুলিশ সেখানে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে উভয়পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। আন্দোলনরত সংঘর্ষের ঘটনায় ইটের আঘাতে নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান, অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগো নিউজের কন্ট্রিবিউটিং প্রতিনিধি মনিরুল ইসলাম শামীমসহ অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন।
সংঘর্ষের পর শিক্ষার্থীরা আবার জমায়েত হয়ে মুক্তির মোড়ে অবস্থান নিয়ে সেখানে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। শিক্ষার্থীরা রাস্তার ওপর বসে পড়ে প্রায় একঘণ্টা ধরে সড়ক অবরোধ করে রাখেন। দুপুর দেড়টার দিকে পরবর্তী দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আজকের আন্দোলন শেষ করেন।
নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক লায়লা আক্তার বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়ে দুপুর ২টা পর্যন্ত ১৩ জন রোগী হাসপাতালে আসেন। এদের সবাই মাথায় ইটের আঘাত লেগে আহত হয়েছেন। এদের একজনের আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন।নওগাঁর পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রাশিদুল হক বলেন, মিছিলের শুরু থেকেই পুলিশ সহনশীল আচরণ করেছে। শিক্ষার্থীদের যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সেজন্য তাদের নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছিল পুলিশ। কিন্তু মিছিলটি আওয়ামী লীগের পার্টি অফিসের কাছে পৌঁছালে মিছিল থেকে কিছু দুষ্কৃতকারী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের লক্ষ্য করে ইট ছুঁড়ে। এরপর উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। ইটের আঘাতে এএসপি গাজিউর রহমানের হাত ভেঙে গিয়েছে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল ছোঁড়া হয়। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।