বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জরুল ইসলাম বলেছেন, স্বৈরাচারের পতনই চূড়ান্ত বিজয় নয়। যতদিন না জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল সৎ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারব, ততদিন ময়দান ছেড়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। শিবির ততদিন ময়দানে থাকবে।
তিনি আরও বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা ছাত্র-জনতার ১ দফা দাবি আদায় করতে গিয়ে সারা দেশে হাসিনা ও তার দোসরদের নির্মম হত্যাযজ্ঞে শত শত ছাত্র-জনতা শহীদ হয়েছেন। তাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অক্টোপাসের মতো আঁকড়ে ধরা স্বৈরাচারী রেজিমের পতন হয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে চলমান আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে গায়েবানা জানাজার আগে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।কেন্দ্রীয় সভাপতি আরও বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছরের অধিক সময় ধরে আওয়ামী সরকার দেশের প্রতিটি সেক্টরকে ধ্বংস করে দিয়েছে। মেধা ও দক্ষতার পরিবর্তে দলীয় ক্যাডারদের প্রাধান্য দিয়ে মেধাবীদের বঞ্চিত করা হয়েছে। আর যখন এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজ সোচ্চার হয়েছে, তখনই তাদের ওপর ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম গণহত্যা চালানো হয়েছে। তরুণসমাজ রক্ত দিয়েছে কিন্তু হার মানেনি। শতশত শহীদের রক্তের বিনিময়ে তাদের কাঙ্ক্ষিত বিজয় ছিনিয়ে এনেছে।
জানাজাপূর্ব সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মিজানুর রহমান সিরাজি, ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিলাল আহমদ চৌধুরী, জাগপা ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুর রহমান ফারুকী, বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মাদ কামাল উদ্দীন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র সমাজের কেন্দ্রীয় সভাপতি এহতেশামুল হক সাখী, ছাত্র জমিয়তের কেন্দ্রীয় সভাপতি খালেদ মাহমুদ, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় সভাপতি এহহেসানুল হক জেলানি।
জানাজায় উপস্থিত নেতৃবৃন্দ বলেন, আমাদের তরুণ ছাত্রসমাজের হাত ধরে যে বিজয় অর্জিত হয়েছে, সেই বিজয়কে অর্থবহ করতে হলে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের জন্য কাজ করতে হবে। সমাজে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং একটি ক্ষুধা, দরিদ্র ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে সৎ, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক তৈরি প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
বক্তারা বলেন, আমাদের ছাত্রসমাজ আমাদের পথ দেখিয়ে দিয়েছে, কীভাবে একটা অনৈতিকভাবে আঁকড়ে ধরে থাকা শক্তিকে পরাজিত করতে হয়। আমাদের তরুণরা আমাদের অনুপ্রেরণা। তরুণসমাজই আগামী দিনের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। আমরা তাদের বীরত্বপূর্ণ বিজয়কে দেশ গড়ার মাধ্যমে অর্থবহ করে তুলবো।
জানাজায় ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীসহ ও ছাত্রজনতা উপস্থিত ছিলেন। ইমামতি করেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম।