জাফর ফিরোজ, মালয়েশিয়া
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যখন উন্নতির শিখরে পৌঁছেছে, তখন তা সম্ভব হয়েছে সেসব দেশের মেধাবী তরুণদের নিরলস পরিশ্রম ও উদ্ভাবনী শক্তির কারণে। আজও আমরা দেখি, তরুণ প্রজন্ম কীভাবে তাদের জাতিকে গড়ে তুলছে। এবার আমাদের দেশেও এক নতুন বাংলাদেশের সূচনা হতে যাচ্ছে; বিদেশে পাড়ি জমানো তরুণেরা দেশে ফিরে আসবে, দেশকে নতুন করে গড়ার সংকল্প নিয়ে।
আজ আমরা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি, সেখানে মেধা বিকাশের সব পথ উন্মুক্ত। এই বাংলাদেশ হবে এমন একটি দেশ, যেখানে প্রতিভা, সৃজনশীলতা এবং উদ্ভাবনী চিন্তাধারার বিকাশের জন্য প্রতিটি তরুণের সামনে থাকবে অপরিসীম সম্ভাবনা। নতুন এই বাংলাদেশের ভিত্তি হবে মেধানির্ভর, রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত। যেখানে সবার জন্য থাকবে সমান সুযোগ এবং উদ্ভাবনের প্রয়োজনীয় পরিবেশ।
আমাদের কাছে উজ্জ্বল উদাহরণ রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার। ১৯৫০-এর দশকে ধ্বংসস্তূপ থেকে উঠে আসা দক্ষিণ কোরিয়া আজ একটি উন্নত দেশ। যার পেছনে রয়েছে মেধাবী তরুণদের হাত। কোরিয়ার তরুণরা বিদেশে পড়াশোনা শেষে দেশে ফিরে এসে প্রযুক্তি, শিক্ষা ও ব্যবসায় নতুন দিগন্ত খুলে দেয়। তাদের উদ্ভাবনী ও কর্মঠ মানসিকতা কোরিয়ার অর্থনীতিকে দ্রুত বিকাশের পথে নিয়ে যায়।
আরেকটি উদাহরণ হচ্ছে চীন। চীনের হাজার হাজার তরুণ বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদ যারা পশ্চিমা দেশগুলোতে উচ্চতর শিক্ষা নিয়েছে, তারা দেশকে ‘বিশ্বের কারখানা’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে। চীনের আজকের উন্নতির মূলে রয়েছে এ সব তরুণদের প্রচেষ্টা, যারা আধুনিক প্রযুক্তি ও দক্ষতা নিয়ে দেশে ফিরে এসেছে।
তরুণরাই একটি দেশের ভবিষ্যৎ। তারা সৃজনশীল, উদ্যমী এবং নতুন ধারণা নিয়ে কাজ করে। তরুণদের হাতে দেশের উন্নতি করতে হলে প্রথমত প্রয়োজন শিক্ষা, প্রযুক্তি এবং উদ্যোক্তা সেক্টরে তাদের ব্যাপকভাবে অন্তর্ভুক্ত করা। উদাহরণ হিসেবে ফিনল্যান্ডের কথা বলা যায়, যেখানে তরুণ উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে শিক্ষা এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিপ্লব ঘটেছে।
ভারতে, তথ্যপ্রযুক্তি সেক্টরে তরুণদের অবদান আজ দেশটিকে বিশ্বের আইটি শক্তিশালী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম হিসেবে স্থান দিয়েছে। তাদের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়াররা বিশ্বের অনেক দেশের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিতে কাজ করছে এবং অনেকেই নিজেদের দেশে ফিরে এসে স্থানীয় পর্যায়ে স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠা করেছে।
আরেকটি উদাহরণ হচ্ছে চীন। চীনের হাজার হাজার তরুণ বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদ যারা পশ্চিমা দেশগুলোতে উচ্চতর শিক্ষা নিয়েছে, তারা দেশকে ‘বিশ্বের কারখানা’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে। চীনের আজকের উন্নতির মূলে রয়েছে এ সব তরুণদের প্রচেষ্টা, যারা আধুনিক প্রযুক্তি ও দক্ষতা নিয়ে দেশে ফিরে এসেছে।
তরুণরাই একটি দেশের ভবিষ্যৎ। তারা সৃজনশীল, উদ্যমী এবং নতুন ধারণা নিয়ে কাজ করে। তরুণদের হাতে দেশের উন্নতি করতে হলে প্রথমত প্রয়োজন শিক্ষা, প্রযুক্তি এবং উদ্যোক্তা সেক্টরে তাদের ব্যাপকভাবে অন্তর্ভুক্ত করা। উদাহরণ হিসেবে ফিনল্যান্ডের কথা বলা যায়, যেখানে তরুণ উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে শিক্ষা এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিপ্লব ঘটেছে।
ভারতে, তথ্যপ্রযুক্তি সেক্টরে তরুণদের অবদান আজ দেশটিকে বিশ্বের আইটি শক্তিশালী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম হিসেবে স্থান দিয়েছে। তাদের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়াররা বিশ্বের অনেক দেশের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিতে কাজ করছে এবং অনেকেই নিজেদের দেশে ফিরে এসে স্থানীয় পর্যায়ে স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠা করেছে।
জাপানের ক্ষেত্রে, তাদের তরুণ ইঞ্জিনিয়াররা শিল্পখাতে অসাধারণ উন্নয়ন ঘটিয়েছে। উচ্চতর প্রযুক্তির ব্যবহার করে তারা বিশ্বব্যাপী জাপানি পণ্যের কদর বাড়িয়েছে।
বাংলাদেশের তরুণরা আজ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তাদের মেধা, দক্ষতা, এবং উদ্ভাবনী চিন্তাধারার মাধ্যমে অসাধারণ সাফল্য অর্জন করছে। তাদের এই সাফল্য শুধু বাংলাদেশের গর্ব নয় বরং পুরো বিশ্বের জন্য একটি উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গুগল, মাইক্রোসফট, ফেসবুক, অ্যামাজনের মতো বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠানগুলোতে বাংলাদেশের তরুণরা নেতৃত্বের আসনে রয়েছেন, যেখানে তারা নতুন উদ্ভাবন, প্রযুক্তির বিকাশ, এবং সৃজনশীল চিন্তাধারার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলোর সাফল্যে অবদান রাখছেন। বাংলাদেশের তরুণরা যে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাফল্য অর্জন করছে, তার পেছনে একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো রাজনৈতিক চাপহীন এবং উদ্ভাবনী চিন্তাধারার জন্য সহায়ক কর্মপরিবেশ।
রাজনৈতিক সহমর্মিতা একটি দেশের উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি। উদাহরণ হিসেবে সিঙ্গাপুরের কথা বলা যায়, যেখানে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং সরকারের সহমর্মিতা দেশটিকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করেছে। লি কুয়ান ইউ-এর নেতৃত্বে সিঙ্গাপুর বিশ্বে একটি অর্থনৈতিক মডেল হয়ে ওঠে, যা আজও অনেক দেশ অনুসরণ করে। যখন সরকার ও জনগণ একসাথে কাজ করে, তখন সেই দেশটি দ্রুত উন্নতি করে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও এই রাজনৈতিক সহমর্মিতা প্রয়োজন, যাতে তরুণরা তাদের মেধা এবং উদ্ভাবনী দক্ষতা কাজে লাগাতে পারে।
মেধাবী তরুণরা মূলত শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং জীবনমানের উন্নতির জন্য বিদেশে পাড়ি জমায়। উদাহরণ হিসেবে বাংলাদেশ বা ভারতের তরুণদের কথা বলা যায়, যারা উচ্চশিক্ষা ও উন্নত জীবনযাপনের আশায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য বা কানাডায় চলে যায়। কিন্তু চাকরি এবং ব্যবসার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে দেশে সঠিক সুযোগ-সুবিধার অভাবেই তারা ফিরে আসতে আগ্রহী হয় না।
প্রবাসী তরুণদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারকে এই সুযোগ-সুবিধাগুলো নিশ্চিত করতে হবে। উদাহরণ হিসেবে চীনের কথাই বলা যায়, যেখানে সরকার বিদেশে পড়াশোনা করা শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ প্রণোদনা প্রদান করেছে, যেন তারা দেশে ফিরে এসে তাদের জ্ঞান প্রয়োগ করতে পারে। বাংলাদেশে যদি একই ধরনের প্রণোদনা এবং সহায়তা প্রদান করা হয়, তবে প্রবাসী তরুণরা দেশে ফিরে এসে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে আগ্রহী হবে। তাদের উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা, বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা এবং কর্মদক্ষতা দেশের বিভিন্ন সেক্টরে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
আজ বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো, যেখানে দেশকে নতুনভাবে গড়ার লক্ষ্যে মেধাবীদের সহায়ক সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্বে রয়েছেন আন্তর্জাতিকভাবে সুপরিচিত ও সম্মানিত ব্যক্তিত্ব নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অধ্যাপক ইউনূসের দায়িত্ব গ্রহণ শুধু জাতীয় নয়, আন্তর্জাতিক মহলেও একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এই নতুন সরকারের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হলো তরুণদের অংশগ্রহণ। নাহিদ ইসলাম এবং আসিফ মাহমুদ কেবল তরুণদের প্রতিনিধিত্বই করছেন না, তারা নতুন প্রজন্মের কাছে একটি উদাহরণ স্থাপন করেছেন যে, সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি, শিক্ষা এবং নেতৃত্বের গুণাবলি দিয়ে তরুণরাও দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে ভূমিকা রাখতে সক্ষম। তাদের অন্তর্ভুক্তি প্রমাণ করে যে, তরুণরা এখন আর কেবল ভবিষ্যতের নেতা নয়, তারা বর্তমানে নেতৃত্ব দিতেও সক্ষম।
এই পরিবর্তনশীল প্রেক্ষাপটে, তরুণরা এখন বুঝতে পারছে যে দেশের উন্নয়নে তাদের অবদান কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তারা উপলব্ধি করছে যে তাদের উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা এবং কর্মক্ষমতা দেশের কল্যাণে কাজে লাগাতে পারে। যেখানে তরুণদের কণ্ঠস্বর হবে দেশের অগ্রগতির প্রধান চালিকা শক্তি।
বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে প্রবাসী তরুণদের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। তারা বিদেশে যে মেধা, দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন, তা দেশের জন্য এক অমূল্য সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। তবে, প্রবাসী তরুণদের এই সম্পদকে দেশের উন্নয়নে কাজে লাগানোর জন্য এখনই প্রয়োজন সরকারের পক্ষ থেকে একটি সুস্পষ্ট নির্দেশনা।