চাঁদপুরের মতলব উত্তরে দীর্ঘদিন যাবৎ ইয়াবা ও গাঁজার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে দূর্গাপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শফিকুল ইসলাম শিকদার নামক এক মাদক ব্যবসায়ী এখন প্রশ্ন হলো-কিভাবে তিনি দিনের পর দিন প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে? এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্থানীয়দের দেওয়া তথ্য সূত্রে জানা গেছে, শফিকুল ইসলাম চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার থেকে মাদক এনে মতলব উত্তরের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করেন। তার বিভিন্ন ইউনিয়নে রয়েছে বিক্রয় প্রতিনিধি। তার পেছনে রয়েছে একজন প্রভাবশালী যুবলীগ নেতা। তার হয়েই কাজ করে শফিকুল ইসলাম শিকদার। সেই যুবলীগ নেতার ছায়ার কারণেই শফিকুল এতদিন ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলো। আর এলাকার কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে হতে হয় বর্বর নির্যাতনের শিকার। সেই যুবলীগ নেতার ভয়ংকরসব অপরাধের কথা এলাকার সবার জানা থাকলেও ভয়ে তার নাম কেউ প্রকাশ করে না। শফিকুল ইসলাম শিকদার শুধু মাদক ব্যবসাই করে না, নেতার নির্দেশে চাঁদাবাজিসহ নানান রকম অপরাধ কর্মকাণ্ডের সাথেও জড়িত। শফিকুলের একটি সন্ত্রাসী ক্যাডার বাহিনীও রয়েছে।
চাঁদপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নুরুল আমিন রুহুলের আস্থাভাজন হয়ে দূর্গাপুরসহ আশপাশের এলাকায় সাধারণ মানুষের জমি দখল, বাড়ী ঘর ভাংচুর, লুটপাট চালিয়েছে। পরর্বতীতে সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম মোহনের বিশ্বস্ত ও আস্থাভাজন হয়ে এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম শুরু করে এই যুবলীগ নেতা। তার ক্যাডার বাহিনী দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করতো, দখল করে নিতো মাছের ঘের ও ভরোপিট। প্রতিবাদ করলে মিথ্যা মামলা দিয়েও হয়রানি করা হতো।
সাবেক ত্রানমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে মতলবের বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি, জায়গা দখল ও মাদকের ব্যাবসা চালিয়ে যেত।
নদীতে অবৈধভাবে বালুকাটা থেকে শুরু করে, চোরাই তেলের ব্যাবসার সাথেও জড়িত ছিলো এই যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম।
গত ৫ আগস্ট বিজয়ের ২দিন আগেও শ্রী-রায়েরচর ব্রীজ ছাত্রদের উপর হামলা চালিয়েছেন এই যুবলীগ নেতা তার ক্যাডার বাহিনী দিয়ে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছাত্রদের উপরে সেই হামলার একটি ভিডিওতে দেখা যায় যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম শিকদার দেশীয় অস্ত্র রামদা হাতে সরাসরি অংশ নেয়। সেই দিনের হামলায় গুলিবিদ্ধ হয় দাউদকান্দি কলেজের একজন ছাত্র।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শফিকুল ইসলাম শিকদার দূর্গাপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি। মাদক ব্যবসা ছাড়াও তার বিরুদ্ধে রয়েছে অসংখ্য অভিযোগ। ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ছাত্র আন্দোলনে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলে কয়েক দিনের জন্য গা-ডাকা দেয় যুবলীগ নেতা শফিকুল। এলাকার স্থানীয় লোকজন স্বস্তিতে থাকে। স্থানীয়দের অভিযোগ কিছুদিন পালিয়ে থেকে যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম এখন এলাকায় বিএনপি নেতার আত্মীয় পরিচয় দিয়ে আবারও অত্যাচার-জুলুম করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম শিকদারের মুঠোফোনে একাধিক বার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করে নাই।