কোনো কারণ ছাড়াই বাবা ও মায়ের কাছে টাকা চাইতেন আরিফ হাজরা। কিন্তু কেন এবং কি কারণে, তার কোনো সঠিক জবাব না দিয়ে ছেলেটি তার বাবা ও মায়ের গায়ে হাত তুলতেন। এমন ঘটনা এক কিংবা দুইবার নয়, দীর্ঘদিন। এ নিয়ে স্বজন এবং প্রতিবেশীর সাহায্য চান নির্যাতিত বাবা ও মা।
কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। একপর্যায়ে গ্রাম্য সালিশ হয়। সেখানেও পরাস্ত হন তারা। অবশেষে ছেলের হাতে নিপীড়নের অভিযোগ পৌঁছে প্রশাসনের কাছে।
তারপর পুলিশ দিয়ে আটক এবং সংশোধনের মুচলেকা সঙ্গে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয় অভিযুক্ত আরিফ হাজরাকে। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় চাঁদপুর সদরের বিষ্ণুপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে ।
চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাখাওয়াত জামিল সৈকত জানান, বিষ্ণপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বিষ্ণুপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম হাজরার ছেলে আরিফ হাজরা (২৩) জবরদস্তিমূলকভাবে তার বাবা-মার কাছে টাকা পয়সা হাতিয়ে নিতো। তবে কাঙ্ক্ষিত টাকা না পেলে প্রায়শই বৃদ্ধ বাবা ও মাকে মারধর করেন।
এমন পরিস্থিতিতে ছেলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ জাহাঙ্গীর আলম বিষয়টি পারিবারিক ও স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এতে ক্ষিপ্ত ছেলের হাতে নতুন করে মারধরের শিকার হন তারা। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে নির্যাতিত এই বাবা ও মা তার কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ জানান। এতে বৃহস্পতিবার বিকেলে থানা পুলিশ অভিযুক্তকে ঘটনাস্থলে আটক করেন। পরে অপরাধীর স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত উক্ত অপরাধ আমলে নিয়ে অপরাধীকে ২ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।
এদিকে, ভ্রাম্যমাণ আদালতকে সার্বিক সহযোগিতা করেন চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ।
চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাখাওয়াত জামিল সৈকত বলেন, বয়স্ক বাবা ও মাকে আক্রমণ করা একটি ন্যাক্কারজনক সামাজিক ও ধর্মীয় অপরাধ। একইসঙ্গে এটি প্রচলিত আইনে একটি ফৌজদারি অপরাধ। তিনি আশা করছেন, উক্ত অপরাধী আরিফ হাজরা সাজাভোগের পর স্বাভাবিক জীবনে ফেরত আসবেন এবং তার বাবা ও মায়ের সঙ্গে সম্মানজনক আচরণ বজায় রাখবেন।