আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমের অভিযোগে অবাক হয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। রিজভী বলেন, আমি তো তার পক্ষে ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী হামলার বিরুদ্ধে কথা বলেছি। অভিযোগটিই মিথ্যা।
রোববার (৬ আগস্ট) জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ২০-২৪ দিন আগে রাজশাহীতে দলীয় একটি কর্মসূচিতে বলেছিলাম, হিরো আলমের মতো একটা নিরীহ ছেলেকে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আঘাত করলো। কেন? তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী আরাফাতের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন।
এ বিএনপি নেতা বলেন, এখন ওই বক্তব্যকে হঠাৎ ভিন্নভাবে কালার দেওয়ার জন্য এ অভিযোগ আনা হয়েছে। উদ্দেশ্য কী? উদ্দেশ্য একটাই, আন্দোলন থেকে জনদৃষ্টি ফেরানো। আমি মনে করি, এসব করে কোনো লাভ হবে না। আমরা জানতে পেরেছি, সরকারের এজেন্সিগুলো ডেকে এনে এসব কাজ করাচ্ছে। আমাদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে, দেওয়া হচ্ছে। সুতরাং সরকারের নির্দেশনায় আরও মামলা হলে তাতে আমরা ভীত নই।
রুহুল কবির রিজভীর বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগ এনে আইনি সহযোগিতা চাইতে রোববার দুপুরে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে যান হিরো আলম।
পরে ডিবিপ্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশীদ ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন। সেখানে তার পাশে হিরো আলমকে অভিযোগের চিঠি হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
ওই ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা ছিল, ‘বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা প্রধান হারুন অর রশিদের কাছে (ডিবি) কার্যালয়ে অভিযোগ জমা দেন হিরো আলম।’
অভিযোগপত্রে হিরো আলম লিখেছেন, ‘গত ৫ আগস্ট তিনি একটি ভিডিও দেখেন সোশ্যাল মিডিয়ায়, যেখানে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী হাজারো জনতার সামনে বক্তব্যে তার প্রসঙ্গ টানেন।’
‘বক্তব্য প্রদানকালে বলেন যে, হিরো আলমের মতো একটা অর্ধপাগল, অর্ধশিক্ষিত, একটা লোক, সে নির্বাচন করছে, মানে রুচি কতটা বিকৃত হলে পরে এরা এ কাজ করতে পারে।’
হিরো আলম অভিযোগ করেন, ‘আমি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ২০১৮ সালে বগুড়া-৪ আসন থেকে এবং ২০২৩ সালে বগুড়া-৪ ও ৬ আসন এবং ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের চুলচেরা বিশ্লেষণে আমি একজন সুস্থ, নির্বাচন করার জন্য উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে তিনবার প্রমাণিত হয়েছি। তাছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউব চ্যানেলে বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান প্রচার করি। সেখানে আমার অসংখ্য ভক্ত আছে। বর্ণিত বক্তব্যের কারণে আমি হতাশা অনুভব করছি, আমার ভক্তদের মাঝেও যথেষ্ট হতাশাসহ ক্ষোভ বিরাজ করছে।’
হিরো আলম বলেন, ‘রুহুল কবির রিজভীর আক্রমণাত্মক মানহানিকর বক্তব্যের কারণে আমি মান-সম্মানহানিসহ সামাজিকভাবে চরম হেয় প্রতিপন্ন হয়েছি। বিএনপির বিভিন্ন প্রোগ্রামে নেতাকর্মীরা বিভিন্ন সময়ে আমাকে নিয়ে কটূক্তি ও আক্রমণাত্মক মানহানিকর বক্তব্য প্রচারের মাধ্যমে অপমান-অপদস্থ করেছে।’
‘তাছাড়া তার (রিজভী) এ অপমানজনক/আপত্তিকর বক্তব্যের কারণে আমি বিএনপির নেতাকর্মী তথা রাজনৈতিক সন্ত্রাসীদের হামলা/হয়রানির আশঙ্কা করছি। এ বিষয়ে আমি আইনগত সহযোগিতা কামনা করছি।’
ডিবিতে অভিযোগ দিয়ে হিরো আলম ঢাকার আদালত পাড়ায় যান। সেখানে তিনি আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করেন। হিরো আলম সাংবাদিকদের জানান, আজ নয়, পরে মামলা করবেন।