জামিন পেয়েছেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সমালোচনা করে গ্রেফতার হওয়া খ্যাতিমান মানবাধিকার কর্মী ইমান মাজারি-হাজির ও সাবেক সংসদ সদস্য আলি ওয়াজির। সোমবার (২৮ আগস্ট) ইসলামাবাদের সন্ত্রাস-বিরোধী আদালত (এটিসি) তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
রোববার (২০ আগস্ট) সকালে ইমানকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। ইমানের মা অভিযোগ, ওই সময় পুলিশের কাছে কোনো গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল না। এমকি, কী কারণে তার মেয়েকে গ্রেফতার করা হচ্ছে তাও বলেনি পুলিশ।
এর আগের দিন শনিবার (১৯ আগস্ট) গ্রেফতার করা হয় পশতুন তাহাফুজ মুভমেন্টের (পিটিএম) সহ-প্রতিষ্ঠাতা আলী ওয়াজিরকে। দুজনের বিরুদ্ধেই রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা হয়। এ ঘটনায় দেশ-বিদেশে সমালোচনার ঝড় ওঠে। সরকার ও সেনাবিরোধী বক্তব্যের কারণেই তাদের গ্রেফতার করা হয় বলে মন্তব্য করছেন বিশ্লেষকরা।
খ্যাতিমান সাংবাদিক সিরিল আলমেইদা বলেন, দুর্নীতির মামলায় পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের প্রধান ইমরান খানকে গ্রেফতারের জেরে গত ৯ মে যে সহিংস বিক্ষোভ হয়েছে, তার কড়া প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে সরকার। বর্তমান প্রশাসন শুধু পিটিআইয়ের প্রতিপক্ষ হয়েই থাকতে চায় না বরং ভিন্ন মতকে দাবিয়ে রাখতে চায়। আর এ কারণেই তারা সবার উপরেই আক্রমণ চালাচ্ছে।
১৯ আগস্ট পশতুন তাহাফুজ মুভমেন্টের একটি সমাবেশে অংশ নিয়েছিলেন ইমান ও ওয়াজির। দুজনই সেখানে বক্তব্য দেন। সেই বক্তৃতার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে ইমানকে বলতে শোনা যায়, আপনাদের (জনগণ) এমনভাবে দমিয়ে রাখা হচ্ছে, যেন আপনারা সন্ত্রাসী। অথচ আসল সন্ত্রাসীরা সেনা সদর দপ্তরে বসে রয়েছে।
মূলত এ বক্তব্যের জেরেই ইমান ও ওয়াজিরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সোমবার (২১ আগস্ট) রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে তাদের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ইসলামাদের সন্ত্রাস বিরোধী আদালত।
ইমান মাজারির মা শিরিন মাজারি ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহেরিক-ই-ইনসাফের সাবেক নেতা ও দেশটির সাবেক মানবাধিকার বিষয়ক মন্ত্রী ছিলেন। গত ৯ মে বিক্ষোভের পর ১২ মে ভোরে ইসলামাবাদ পুলিশ বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। এরপরই পিটিআই থেকে পদত্যাগ করেন শিরিন মাজারি।