মতলব উত্তর থানার লবাইরকান্দি মৌজায় বড় মরাদোন গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. কামাল উদ্দিন (৭০) এর জমিটি পুনরায় বেদখল হয়েছে।
১৯৮৪ সালে এই মুক্তিযোদ্ধা ৩২ দাগের জমিটি ক্রয়সুত্রে মালিক হন এবং ২০১৩ সাল পর্যন্ত (প্রায় ৩০ বছর) নিরবিচ্ছিন্ন ভোগ দখল করেন। অন্যদিকে ৩০ দাগের মালিক মো. হানিফ মাঝি তার প্রাপ্য অংশের অতিরিক্ত জমি দখল করে ফেলেন বিধায় ৩১ দাগের মালিক তারই চাচাতো ভাই মো. মিজানুর রহমান মাঝি গং তাদের অংশ পরনের জন্য এই বৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধার জমিতে কুনজর দেয়। ফলে ২০১৩ সালে সে লোভের বশবর্তী হয়ে ৩২ দাগে একটি নামমাত্র টিনের ঘর উত্তোলন করেন এবং মালিকানা দাবি করেন।
স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন ভাবে উক্ত জমিটি ফিরে পাবার জন্য এই মুক্তিযোদ্ধা ০৫ বছর চেস্টা তদবির করেছেন। প্রতিবারেই সালিসিতে অবৈধ দখলদার মিজানুর রহমান মাঝি জমিটি ফিরিয়ে দিবে মর্মে স্বীকার করে কিন্তু পরে বিভিন্ন তাল-বাহানা করে এবং জমিটি দখল ছাড়ে না। অবশেষে নিরুপায় হয়ে ৩২ দাগের মালিক আদালতের শরণাপন্ন হোন। প্রায় ৫ বছর মামলা চালানোর পর সম্পূর্ণ আইনি প্রক্রিয়ায় বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আদালত, চাঁদপুর এর রায়ের আলোকে ডিক্রি জারি মামলা ৩/২৩ অনুযায়ী গত ২৪/০৭/২০২৩ খ্রি. তারিখে চাঁদপুর জেলা জজ আদালতের নাজির, সার্ভে কমিশনার, ঢুলী, মালী, পুলিশ প্রশাসন এবং স্থানীয় গণ্য মান্য ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত থেকে মুক্তিযোদ্ধার জমিটি তাকে দখল বুঝিয়ে দেন।
জমি বুঝে পাবার পর তিনি জমিতে ৪০টি পিলার ও কাটা তারের বেস্টনী দিয়ে সেখানে নোটিশ টাঙ্গিয়ে দেন এবং নালিশি ১০সহ মোট ৮৮ শতক জমিতে তিনি চাষাবাদ শুরু করেন।
অপরদিকে হানিফ মাঝির পরামর্শে মিজান মাঝি উচ্চ আদালত তথা হাইকোর্টে আপিল দায়ের করলে মাননীয় হাইকোর্ট বিভাগ প্রথমে চাদপুরের আপীল মামলার স্টে অর্ডার দেন এবং পরে বিবাদি কামাল উদ্দিন এর আবেদনে গত ২৩ আগস্ট স্ট্যাটাস-কো বা স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেন। সে মোতাবেক হাইকোর্টে আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত চাঁদপুর আদালতের দেয়া দখল শান্তি পূর্ণ ভাবে বজায় রাখতে দুপক্ষই বাধ্য। স্থিতাবস্থা ঘোষণায় বাদি পক্ষ মিজানুর রহমান মাঝি তার চাচতো ভাই হানিফ মাঝির পরিকল্পনায় তার দুই পুত্র (মবিন, মেহেদি), বোন জামাই আবু তাহের সহ অজ্ঞাত নামা ৮/১০ জন লোকজন সহ হাইকোর্টের আদেশ উপেক্ষা করে রাতের আধারে এই মুক্তিযোদ্ধা বৃদ্ধের জমির সীমানা বেস্টনি উপড়ে ফেলে এবং পুরো ৮৮ শতকের ফসল নষ্ট করে ফেলে।
এই বিষয়ে মতলব উত্তর থানায় একটি জিডি করা হয়েছে এবং সর্বশেষ প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী মো. কামাল উদ্দিন তার জমিতে পুনরায় কাটা তারের বেড়া দিয়েছেন। তার এই ফসল নষ্ট করায় এবং সীমানা পিলার, কাটা তার ইত্যাদি নস্ট করায় তিনি দারুন ভাবে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। তিনি মাননীয় আদালতের কাছে এর ন্যায় বিচার প্রার্থনা করেন এবং একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা কামনা করেন।