১৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বেলা ১১টায় উপজেলার ১০নং গোবিন্দপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডে মিয়ারাজা মিজি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত প্রভাবশালী ব্যক্তি ওই এলাকার আলী আহমেদ মিলিটারির পুত্র বিল্লাল হোসেন দুলাল মিজি। অতহ বিল্লাল হোসেন একই বাড়ির বারেক মিজির পুত্র। সে পেশায় একজন রাজমিস্ত্রির সহযোগী (যুগালি)।
তবে এমন অমানবিক ঘটনার পরেও প্রভাবশালী ওই ব্যক্তির ভয়ে বিষয়টি প্রকাশ করতে কিংবা আইনি সহায়তা নিতে পারছে না অসহায় পরিবারটি।
শুক্রবার বিকেলে চাঁদপুর সরকারী জেনারেল হাসপাতালে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শরীরের একাধিক আঘাতের চিহ্ন নিয়ে ফ্লোরের বিছানায় শুয়ে মৃত্যু যন্ত্রণা কাতরাচ্ছে অসহায় বিল্লাল হোসেন।
ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে বিল্লাল হোসেন এবং তার মা হাউমাউ করে কেঁদে দেন। আহত বিল্লাল হোসেনের মা জানান, এলাকার প্রভাবশালী দুলাল মিজি বিনা কারণে তার ছেলেকে পশ্চিম লাড়ুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ডেকে নিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়েছে। কি কারনে তার ছেলেকে এভাবে পেটানো হয়েছে, সে বিষয়ে তারা কিছু জানেন না। এ সময় তিনি গণমাধ্যম কর্মীদের অনুনয়-বিনয় করে বলেন, ‘আপনারা এই খবর ছাপাইলে দুলাল মিজি আমগোরে মাইরা ফালাইবো। দয়া কইরা আপনারা পেপারে কিছু দিয়েন না। আমরা আল্লার কাছে বিচার দিছি।’
একই কথা বলে, হাউ মাউ করে কেঁদে ফেলেন রাজমিস্ত্রির সহযোগী (যুগালি) বেলাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘স্যার আমারে হেয় অনেক মারছে। মাটিত ফালায় পিটাইছে। এই কথা কইলে আমারে আবার মাইর দিব। আমি কিছু কমু না। হের অনেক ক্ষমতা।’
এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আহত বিল্লাল হোসেনকে স্থানীয় মতি মিজি ডেকে নিয়ে তাদের বাড়ির সীমানার একটি গাছ কেটে ফেলতে বলেন। তিনি জানান, এই নির্দেশ দুলাল মিজী দিয়েছেন। তখন বিল্লাল অপারগতা প্রকাশ করে। এতে দুলাল মিজি ক্ষিপ্ত হয়ে বিল্লালকে ডেকে এনে স্কুল মাঠে প্রকাশ্যে বেদম পিটিয়ে আহত করে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত বিল্লাল হোসেন দুলাল মিজুর সাথে তার ব্যক্তিগত (০১৬১৩৮৩৪৪১০/ ০১৭০৩৫৪৪৮১২) নাম্বারে বহুবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহাদাত হোসেন বলেন, বিষয়টি অমানবিক। তবে আমি এখন এ বিষয়ে কিছু জানি না। আমি এমি এখনি খোঁজ নিচ্ছি। ঘটনাটি কি ঘটেছিলো।
১০ নং গোবিন্দপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন ভুইয়া জানান, ‘আমি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নই। চিকিৎসার কারণে আমি ঢাকা রয়েছি। তবে এমন ঘটনা ঘটে থাকলে সেটি অমানবিক।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুলাল মিজি হাইমচর উপজেলাের বাসীন্দা হলেও প্রভাব দেখিয়ে পশ্চিম লাড়ুয়া এলাকার একটি এতিমখানার কক্ষ দখল করে সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। তার অপকর্ম নিয়ে এর আগেও গণমাধ্যমে অসংখ্য সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে আদালতে একাধিক মামলা রয়েছে।