পরম যত্নে প্রতিবছরই একটি করে ষাঁড় লালনপালন করেন আশরাফুল। এবারও একটি ষাঁড় লালনপালন করে উপযোগী করে তুলেছেন কোরবানির হাটে বিক্রির জন্য। ৩০ থেকে ৩২ মণ ওজনের ষাঁড়টি স্বভাবে শান্তশিষ্ট হওয়ায় আশরাফুল ষাঁড়টির নাম রেখেছেন ‘শান্ত’। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে লালনপালন করায় আশরাফুল শান্তর দাম হেঁকেছেন ১৫ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার (৪ জুন) শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার কনেশ্বর ইউনিয়নের সুতলকাঠি গ্রামে গিয়ে দেখা মিলেছে হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান জাতের শান্তর।
জানা যায়, সুতলকাঠি গ্রামের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক আশরাফুল হক চার বছর ধরে শান্তকে লালনপালন করেছেন। ৬ মাস বয়সে গোসাইরহাট গরুর হাট থেকে আশরাফুল গরুটি কেনেন। এরপর থেকে ভুসি, কুরা, খইল, জাউ ভাত, চিটাল ও ঘাস খাইয়ে বড় করতে থাকেন শান্তকে। বর্তমানে শান্ত লম্বায় ৯ ফুট ও দৈর্ঘ্যে সাড়ে ৮ ফুট। শান্তকে প্রতিদিন ৩ বার গোসল করাতে হয়। রাতে ঘুমের জন্য শান্তর প্রয়োজন হয় ইলেক্ট্রনিক ফ্যানের। প্রতিদিন ৪ বার খাবার খেয়ে শান্তর ওজন এখন ৩০ থেকে ৩২ মণ। শান্তর মালিক আশরাফুলের দাবি, শান্ত উপজেলার সবচেয়ে বড় ষাঁড়। বিশালাকৃতির শান্তকে দেখতে প্রতিদিনিই বাড়িতে লোকজন আসে। গত বছর শান্তর দাম উঠেছিল ৮ লাখ টাকা। এ বছর ১৫ লাখ টাকা দাম পেলে শান্তকে বিক্রি করবেন বলে জানিয়েছেন আশরাফুল।
শান্তকে দেখতে আসা মেহেদী হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, শান্ত স্বভাব চরিত্রে আসলেই শান্ত। এমন বিশালাকৃতির ষাঁড় খুব কম দেখা যায়। এতো বড় ষাঁড় দেখতে পেয়ে ভালোই লাগছে। আশা করছি শান্তর মালিক ন্যায্য মূল্যে শান্তকে বিক্রি করতে পারবেন।
শান্তর মালিক আশরাফুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, ৪ বছর আগে ৫৫ হাজার টাকা দিয়ে গরুটি কিনেছিলাম। আমি ও আমার স্ত্রী মিলে শান্তকে লালনপালন করেছি। স্বভাব চরিত্রে শান্ত হওয়ায় নাম রেখেছি শান্ত। শান্তর একটি স্বভাব হলে বাড়িতে অপরিচিত লোক ঢুকলে সে ডাকাডাকি শুরু করে। পরিচিত কেউ এর কাছে না যাওয়া পর্যন্ত শান্ত ডাকতে থাকে। শান্তকে কখনো ফিড খাওয়ানো বা ইনজেকশন দেওয়া হয়নি, যার কারণে শান্ত অসুস্থ হয় না। আমার ধারণা শান্ত উপজেলার সবচেয়ে বড় ষাঁড়। ব্যবসায়ীরা গত বছর শান্তর দাম ৮ লাখ টাকা পর্যন্ত বলেছিলেন। এ বছর ১৫ লাখ টাকা পেলে আমি শান্তকে বিক্রি করব।শরীয়তপুর জেলার প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক ঢাকা পোস্টকে বলেন, একটি ষাড়কে বড় করতে মালিকের অনেক পরিশ্রম ও অর্থ ব্যয় হয়। শান্তর ওজন প্রায় ৩০ থেকে ৩২ মণ। প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা সব সময় খামারি ও কৃষকের পাশে ছিল। আশা করছি, শান্তকে তার মালিক ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করে লাভবান হতে পারবেন।