মাঝে অনেকদিন টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ওপেনার সংকটে ভুগেছে বাংলাদেশ। সেই ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর ৮-৯ জনকে ‘ট্রাই’ করা হয়েছে। কিন্তু কাঙ্খিত ফল মেলেনি। এর মধ্যে তামিম ইকবাল সরে দাঁড়ানোর পর লিটন দাস ছাড়া সে অর্থে ওপেনার হিসেবে কাউকে খুঁজেও পাওয়া যাচ্ছিল না। কারণ যাকেই খেলানো হয়েছে, তিনিই ব্যর্থ হয়েছেন।
তারপর রনি তালুকদারকে খুঁজে বের করা হলো। দীর্ঘ আট বছর পর ফেরানো হলো ৩১ বছর বয়সী এই ব্যাটারকে। নারায়ণগঞ্জের এ মারকুটে ওপেনার নিজেকে মোটামুটি মেলেও ধরলেন। কিন্তু এবার আফগানিস্তানের সাথে প্রথম ম্যাচে ব্যর্থ হবার পর দ্বিতীয় খেলার আগে হঠাৎ করেই কাঁধের ইনজুরিতে পড়েন রনি।
নাজমুল হোসেন শান্তকে যেহেতু তিন নম্বরে খেলানো হচ্ছে, তাই বিকল্প ওপেনারও নেই। কী করা যায়? অনেক ভেবেচিন্তে আফিফ হোসেন ধ্রুবকে লিটন দাসের সাথে ওপেন করতে পাঠানো হলো।
আফিফ আহামরি কিছু করতে না পারলেও ২০ বলে ২৪ রানের এক মাঝারি ইনিংস উপহার দিয়েছেন। পরিবর্তিত ওপেনার হয়েও লিটনের সঙ্গে প্রথম উইকেটে ৯.১ ওভারে ৬৭ রানের শক্ত ভিতও গড়ে দিয়েছেন আফিফ।
যে বাঁহাতি ব্যাটার এই আফগানিস্তানের সাথে ওয়ানডেতে মিডল অর্ডারে খেলে ০ আর ৪ রানে আউট হয়েছেন, তাকে ছয়-সাত নম্বর থেকে প্রমোশন দিয়ে ওপেনার হিসেবে খেলানো- সেটাই অনেক কিছু। আজকাল সেই ‘ফ্লেক্সিবিলিটিটা’ দেখাতে পারছে বাংলাদেশ।
অধিনায়ক সাকিব মনে করেন এই ফ্লেক্সিবিলিটিই দলের জন্য অনেক কল্যাণ বয়ে এনেছে। সাকিব বোঝানোর চেষ্টা করেন, টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটটাই এমন যে এখানে কখনো ওপেনারকে সাত নম্বরে আর সাত নম্বরকে প্রয়োজনে ওপেনার হিসেবে খেলতে হবে।
একইভাবে বোলারদের কোনো নির্দিষ্ট জায়গা নেই। যে কোনো সময় যে কোনো প্রেক্ষাপটে বোলিং করতে হতে পারে। যে দলের ক্রিকেটারদের এই ক্ষমতাটা যখন বেশি থাকবে, তখন সে দলের সফল হবার সম্ভাবনাও বেশি থাকে। সাকিব বোঝানোর চেষ্টা করেন, টিম বাংলাদেশের ব্যাটার ও বোলারদের এখন সে ক্ষমতা বেড়েছে।
তাই তো টাইগার টি-টোয়েন্টি ক্যাপ্টেনের মুখে এমন কথা, ‘ফ্লেক্সিবিলিটি থাকলে দলের জন্য খুব ভালো হয়। টি-টোয়েন্টিতে একজন ওপেনারকে যে কাজ করতে হয়, সাত নম্বরেও তার সেই কাজ করতে হতে পারে। যদি ওপেনার ১৫ ওভার পর্যন্ত ব্যাট করে, পরের ৫ ওভারও তাকে খেলতে হতে পারে।’
সাকিব যোগ করেন, ‘সবাই যদি সব জায়গায় ব্যাট করতে পারে এবং সব পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে, তাহলে এরকম কঠিন পরিস্থিতি যখন আসবে, তখন ওই ব্যাটারের নতুন করে কিছু মনে হবে না। একই ব্যাপার বোলারদের জন্যও। বোলাররা যখন বিভিন্ন পরিস্থিতিতে বল করবে, ওর জন্য আর নতুন করে কিছু মনে হবে না।’
বোলারদের কাজের ধরন সম্পর্কে ধারণা দিয়ে সাকিব বলেন, ‘আমরা যে ৫-৬ জন বোলার আছি, আমাদের কাজটাই হচ্ছে ব্যাটারদের কাজ সহজ করে দেওয়া এবং ওটাই আমরা সবসময় চেষ্টা করি। এখন যে কম্বিনেশন আছে, পেসার ও স্পিনারদের দারুণ একটি স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতাও দেখছি। এটা দলের জন্য ভালো দিক।’