দেশজুড়ে ডেঙ্গুর বিস্তারের মধ্যে এইডিস মশাবাহিত এ রোগে আক্রান্তদের মধ্যে গত এক দিনে ১৯ জন মারা গেছেন; দৈনিক মৃত্যুর এ সংখ্যা এ বছরের সর্বোচ্চ।
এ নিয়ে চলতি বছর মশাবাহিত এ রোগে মৃতের সংখ্যা পৌঁছাল ১৪৬ জনে; যাদের মধ্যে ৯৯ জনের মৃত্যু হয়েছে চলতি জুলাই মাসের ১৮ দিনে।
বুধবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বুধবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১ হাজার ৭৯২ জন ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাতে এ বছর হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা পৌঁছেছে ২৫ হাজার ৭৯২ জনে। শুধু জুলাই মাসের ১৮ দিনেই ভর্তি হয়েছেন ১৭ হাজার ৮১৪ জন।
নতুন রোগীদের মধ্যে ঢাকায় ৯২২ জন এবং ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ৮৭০ জন ভর্তি হয়েছেন। যে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে ১৭ ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে এবং ২ জন ঢাকার বাইরে মারা গেছেন।
বর্তমানে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৫৫৫২ জন রোগী। তাদের মধ্যে ঢাকায় ৩৩৭০ জন এবং ঢাকার বাইরে ২১৮২ জন।
এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ দ্রুত বাড়ছে। জুন মাসে ৫ হাজার ৯৫৬ জন রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, মৃত্যু হয়েছিল ৩৪ জনের। জুলাইয়ের প্রথম ১৮ দিনেই সেই সংখ্যা বেড়ে তিনগুণ হয়েছে।
মাসের হিসাবে জানুয়ারিতে ৫৬৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬ জন, মার্চে ১১১ জন, এপ্রিলে ১৪৩ জন, মে মাসে ১০৩৬ জন এবং জুন মাসে ৫৯৫৬ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
তাদের মধ্যে জানুয়ারিতে ছয়জন, ফেব্রুয়ারিতে তিনজন, এপ্রিলে দুজন, মে মাসে দুজন এবং জুন মাসে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এ বছর এইডিস মশা শনাক্তে চালানো জরিপে ঢাকায় মশার যে উপস্থিতি দেখা গেছে, সেটিকে ঝুঁকিপূর্ণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এ অবস্থায় সামনে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও বাড়ার আশঙ্কা করেছেন তারা।
ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ বছর যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের প্রায় সবাই ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারে ভুগছিলেন এবং শক সিনড্রোমে মারা গেছেন।
এইডিস মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত হয়ে গত বছর ৬২ হাজার ৩৮২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। তাদের মধ্যে রেকর্ড ২৮১ জনের মৃত্যু হয়।
এর আগে ২০১৯ সালে দেশের ৬৪ জেলায় এক লাখের বেশি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন, যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ। সরকারি হিসাবে সে বছর মৃত্যু হয়েছিল ১৭৯ জনের।