শুধু রমজান মাসেই হালিম বেচেন মো. হযরত আলী। তাঁর তৈরি হালিমের আলাদা কদর আছে খুলনা শহরের মানুষের কাছে। লোকে ভালোবেসে নাম দিয়েছে ‘নানা হালিম’। খুলনায় ইফতারে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকে এই হালিম। প্রতিদিন ১০০-১৫০ কেজি পর্যন্ত রান্না হয় নানা হালিম। খাসির মাংস দিয়ে রান্না করা হালিম কিনতে ভিড় শুরু হয় দুপুর থেকে।
হযরত আলী পেশায় বাবুর্চি, বয়স প্রায় ৮০ বছর। তবে তাঁর মূল নামটি ঢাকা পড়ে গেছে ‘নানা হালিম’ নামের আড়ালে। প্রায় ৩১ বছর ধরে হালিম বিক্রি করছেন তিনি। তবে এক যুগ ধরে শুধু রমজান মাসেই হালিম বিক্রি সীমিত রেখেছেন। খুলনা নগরের সাউথ সেন্ট্রাল সড়কের সরকারি পাইওনিয়ার মহিলা কলেজের সামনের ফুটপাতে বসেন তিনি। কাপড় দিয়ে অস্থায়ী দোকানের মতো বানিয়ে সেখানেই দিব্যি চলছে হালিম বিক্রি।হযরত আলী বলেন, ‘বয়স হয়েছে। এখন আর শরীর আগের মতো কুলায় না। তা ছাড়া ছেলেমেয়েরাও বড় হয়েছে। তাঁরা চাকরি করছে, এ কারণে আয়ের চাহিদাও খুব বেশি নেই। নিজের ছোট একটি মাছের ঘের আছে। তা দিয়ে ভালোই চলে যায়। রমজান মাসে শুধু রোজাদারদের কথা চিন্তা করেই এক মাস হালিম তৈরি ও বিক্রি করি। সবাই এসেই নানা ডাক দেয়, তাতেই বুক ভরে যায়। এই নানা ডাক শুনতেই রমজান মাসে হালিম বেচি।’
হালিমের মান ঠিক রাখতে এখনো হযরত আলী নিজ হাতেই রান্না করেন। তবে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে এবার হালিমের দামও বেড়েছে। এ বছর সর্বনিম্ন ২০০ টাকা থেকে শুরু হয়েছে হালিমের দাম। নানা আকারের মাটির পাত্রে ৩০০, ৫০০, ৮০০ ও ১ হাজার ৮০০ টাকা মূল্যের হালিম পাওয়া যায়। প্রতিদিন বেলা ২টা থেকে ইফতারের আগপর্যন্ত হালিম বিক্রি হয়। আর হালিম তৈরির কাজ শুরু হয় সকাল ৭টা থেকে। সাতজন বাবুর্চিসহ ৯ জন কাজ করেন তাঁর সঙ্গে।আজ সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে গিয়ে দেখা যায়, কিছুক্ষণ আগে হালিমভর্তি কয়েকটি বড় হাঁড়ি নিয়ে আসা হয়েছে দোকানে। বিভিন্ন আকারের মাটির ও প্লাস্টিকের পাত্র সাজিয়ে রাখা হয়েছে সামনে। তখনো খুব বেশি ভিড় শুরু হয়নি। দু–একজন ক্রেতা আসছেন আর চাহিদা অনুযায়ী হালিম নিয়ে যাচ্ছেন। আর টাকা বুঝে নিচ্ছেন হযরত আলী। বেশ পরিপাটি ও মিষ্টভাষী মানুষ হযরত আলী। বললেন, রমজান মাসে বাবুর্চিদের হাতে খুব বেশি কাজ থাকে না। এ কারণে তাঁর কাজে সাতজন বাবুর্চি সহায়তা করেন। এই কাজের মাধ্যমে রোজার মাসে তাঁরা অন্তত কিছু টাকা পান।
কাজের ফাঁকে হালিম বিক্রির শুরু করার কথা বলেন প্রথম আলোকে। একসময় চট্টগ্রামে একটি কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন হযরত আলী। সেটি বন্ধ হয়ে গেলে চলে আসেন খুলনায়। পাইওনিয়ার কলেজে নিরাপত্তা প্রহরীর কাজ নেন। তখন ওই আয় দিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হতো। এ কারণে ১৯৯৩ সালের দিকে বিকেলে ভ্যানে করে কলেজের সামনেই হালিম বিক্রি শুরু করেন। স্বাদের পার্থক্য থাকায় হালিমের সুনাম ছড়িয়ে পড়ে মানুষের মুখে মুখে। প্রথম দিকে এক কেজি দিয়ে শুরু করলেও মানুষের চাহিদার কারণে দিন দিন তা বাড়তে থাকে। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। পরে চাকরি ছেড়ে দিয়ে শুধু হালিম বিক্রি শুরু করেন তিনি। অসুস্থতার কারণে ২০১০-১১ সালের দিকে প্রতিদিন হালিম বিক্রি করা ছেড়ে দেন। তখন থেকে শুধু রোজার মাসেই হালিম বিক্রি করেন তিনি।
হযরত আলী বলেন, ছুটির দিন বাদে ১০০ কেজির মতো হালিম তৈরি করেন। আর ছুটির দিনে তা হয় ১৩০-১৫০ কেজি পর্যন্ত। কোনো কোনো দিন আসরের পরপরই হালিম শেষ হয়ে যায়, আবার কোনো কোনো দিন শেষ হয় ইফতারের ঠিক আগমুহূর্তে।
দোকানে হালিম বিক্রিতে সহায়তা করছিলেন আবদুস সালাম নামের এক কর্মচারী। কলেজ গেটেই তাঁর একটি ফটোকপির দোকান আছে। আবদুস সালাম বলেন, রোজার মাসে দোকানে খুব বেশি কাজ থাকে না। এ কারণে চার বছর ধরে হযরত আলীর সঙ্গে হালিম বিক্রিতে সহায়তা করছেন।
মনিরুল হক নামের এক ব্যবসায়ী হালিম কিনতে এসেছিলেন। তিনি বলেন, নানা হালিমের বিশেষত্ব খাসির মাংস ও স্বাদের পার্থক্য। এমন সুস্বাদু হালিম খুব কমই পাওয়া যায়। প্রতিবছর রমজানে ইফতারির জন্য দুই-তিন দিন নানা হালিম নিয়ে যান। বাড়ির সবাই খুব পছন্দ করে এই হালিম।
শুধু রমজান মাসেই হালিম বেচেন মো. হযরত আলী। তাঁর তৈরি হালিমের আলাদা কদর আছে খুলনা শহরের মানুষের কাছে। লোকে ভালোবেসে নাম দিয়েছে ‘নানা হালিম’। খুলনায় ইফতারে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকে এই হালিম। প্রতিদিন ১০০-১৫০ কেজি পর্যন্ত রান্না হয় নানা হালিম। খাসির মাংস দিয়ে রান্না করা হালিম কিনতে ভিড় শুরু হয় দুপুর থেকে।
হযরত আলী পেশায় বাবুর্চি, বয়স প্রায় ৮০ বছর। তবে তাঁর মূল নামটি ঢাকা পড়ে গেছে ‘নানা হালিম’ নামের আড়ালে। প্রায় ৩১ বছর ধরে হালিম বিক্রি করছেন তিনি। তবে এক যুগ ধরে শুধু রমজান মাসেই হালিম বিক্রি সীমিত রেখেছেন। খুলনা নগরের সাউথ সেন্ট্রাল সড়কের সরকারি পাইওনিয়ার মহিলা কলেজের সামনের ফুটপাতে বসেন তিনি। কাপড় দিয়ে অস্থায়ী দোকানের মতো বানিয়ে সেখানেই দিব্যি চলছে হালিম বিক্রি।হযরত আলী বলেন, ‘বয়স হয়েছে। এখন আর শরীর আগের মতো কুলায় না। তা ছাড়া ছেলেমেয়েরাও বড় হয়েছে। তাঁরা চাকরি করছে, এ কারণে আয়ের চাহিদাও খুব বেশি নেই। নিজের ছোট একটি মাছের ঘের আছে। তা দিয়ে ভালোই চলে যায়। রমজান মাসে শুধু রোজাদারদের কথা চিন্তা করেই এক মাস হালিম তৈরি ও বিক্রি করি। সবাই এসেই নানা ডাক দেয়, তাতেই বুক ভরে যায়। এই নানা ডাক শুনতেই রমজান মাসে হালিম বেচি।’
হালিমের মান ঠিক রাখতে এখনো হযরত আলী নিজ হাতেই রান্না করেন। তবে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে এবার হালিমের দামও বেড়েছে। এ বছর সর্বনিম্ন ২০০ টাকা থেকে শুরু হয়েছে হালিমের দাম। নানা আকারের মাটির পাত্রে ৩০০, ৫০০, ৮০০ ও ১ হাজার ৮০০ টাকা মূল্যের হালিম পাওয়া যায়। প্রতিদিন বেলা ২টা থেকে ইফতারের আগপর্যন্ত হালিম বিক্রি হয়। আর হালিম তৈরির কাজ শুরু হয় সকাল ৭টা থেকে। সাতজন বাবুর্চিসহ ৯ জন কাজ করেন তাঁর সঙ্গে।আজ সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে গিয়ে দেখা যায়, কিছুক্ষণ আগে হালিমভর্তি কয়েকটি বড় হাঁড়ি নিয়ে আসা হয়েছে দোকানে। বিভিন্ন আকারের মাটির ও প্লাস্টিকের পাত্র সাজিয়ে রাখা হয়েছে সামনে। তখনো খুব বেশি ভিড় শুরু হয়নি। দু–একজন ক্রেতা আসছেন আর চাহিদা অনুযায়ী হালিম নিয়ে যাচ্ছেন। আর টাকা বুঝে নিচ্ছেন হযরত আলী। বেশ পরিপাটি ও মিষ্টভাষী মানুষ হযরত আলী। বললেন, রমজান মাসে বাবুর্চিদের হাতে খুব বেশি কাজ থাকে না। এ কারণে তাঁর কাজে সাতজন বাবুর্চি সহায়তা করেন। এই কাজের মাধ্যমে রোজার মাসে তাঁরা অন্তত কিছু টাকা পান।
কাজের ফাঁকে হালিম বিক্রির শুরু করার কথা বলেন প্রথম আলোকে। একসময় চট্টগ্রামে একটি কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন হযরত আলী। সেটি বন্ধ হয়ে গেলে চলে আসেন খুলনায়। পাইওনিয়ার কলেজে নিরাপত্তা প্রহরীর কাজ নেন। তখন ওই আয় দিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হতো। এ কারণে ১৯৯৩ সালের দিকে বিকেলে ভ্যানে করে কলেজের সামনেই হালিম বিক্রি শুরু করেন। স্বাদের পার্থক্য থাকায় হালিমের সুনাম ছড়িয়ে পড়ে মানুষের মুখে মুখে। প্রথম দিকে এক কেজি দিয়ে শুরু করলেও মানুষের চাহিদার কারণে দিন দিন তা বাড়তে থাকে। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। পরে চাকরি ছেড়ে দিয়ে শুধু হালিম বিক্রি শুরু করেন তিনি। অসুস্থতার কারণে ২০১০-১১ সালের দিকে প্রতিদিন হালিম বিক্রি করা ছেড়ে দেন। তখন থেকে শুধু রোজার মাসেই হালিম বিক্রি করেন তিনি।
হযরত আলী বলেন, ছুটির দিন বাদে ১০০ কেজির মতো হালিম তৈরি করেন। আর ছুটির দিনে তা হয় ১৩০-১৫০ কেজি পর্যন্ত। কোনো কোনো দিন আসরের পরপরই হালিম শেষ হয়ে যায়, আবার কোনো কোনো দিন শেষ হয় ইফতারের ঠিক আগমুহূর্তে।
দোকানে হালিম বিক্রিতে সহায়তা করছিলেন আবদুস সালাম নামের এক কর্মচারী। কলেজ গেটেই তাঁর একটি ফটোকপির দোকান আছে। আবদুস সালাম বলেন, রোজার মাসে দোকানে খুব বেশি কাজ থাকে না। এ কারণে চার বছর ধরে হযরত আলীর সঙ্গে হালিম বিক্রিতে সহায়তা করছেন।
মনিরুল হক নামের এক ব্যবসায়ী হালিম কিনতে এসেছিলেন। তিনি বলেন, নানা হালিমের বিশেষত্ব খাসির মাংস ও স্বাদের পার্থক্য। এমন সুস্বাদু হালিম খুব কমই পাওয়া যায়। প্রতিবছর রমজানে ইফতারির জন্য দুই-তিন দিন নানা হালিম নিয়ে যান। বাড়ির সবাই খুব পছন্দ করে এই হালিম।