সময় যত গড়াচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেট অনুরাগীদের মনে দু-তিনটি প্রশ্ন ততই জোরালো হচ্ছে। প্রথম হলো, তামিম ইকবালের পরিবর্তে নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক হবেন কে? দ্বিতীয় হলো, ওপেনার তামিম ইকবালের জায়গায় দলে সুযোগ দেওয়া হবে কাকে?
সর্বশেষ কৌতূহলি প্রশ্নটা হলো অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে। এশিয়া কাপের প্রাথমিক দলে রিয়াদ থাকবে তো? আগামী পরশু (৮ আগস্ট) থেকে শেরে বাংলায় এশিয়া কাপ সামনে রেখে জাতীয় দলের যে ক্যাম্প শুরু, তাতে কি রিয়াদকে দেখা যাবে?
বিভিন্ন সময় বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের কাছে রাখা হয়েছে এ প্রশ্ন। তিনি হ্যাঁ না কিছুই স্পষ্ট করে বলেননি। কখনো বলেননি যে, হ্যাঁ রিয়াদকে বিবেচনায় রাখা হবে। আবার রিয়াদের আর কোনোই সম্ভাবনা নেই- এমন কথাও বের হয়নি বিসিবি প্রধানের মুখ থেকে।
একইভাবে ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটি চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসও কখনো রিযাদের এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের দলে থাকা না থাকা নিয়ে পরিষ্কার করে কোনো মন্তব্য করেননি। হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে, প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু, নির্বাচক কমিটির অন্য দুই সদস্য হাবিবুল বাশার সুমন ও আব্দুর রাজ্জাকও এখন পর্যন্ত রিয়াদকে নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
তারপরও রিয়াদকে ফিটনেস টেস্টের জন্য ডাকা হয়েছিল। ৩২ জনের মধ্যে রিয়াদ আহামরি কিছু করতে না পারলেও ফিটনেস পরীক্ষায় ফেল করেননি। তার স্কোর ছিল ১৭.৬।
এদিকে ৪৮ ঘণ্টা পর এশিয়া কাপের অনুশীলন শুরু। আগামীকাল ও পরশুর মধ্যে হয়তো চূড়ান্ত হবে ২১-২২ জনের প্রাথমিক দল। সেই দলটি হেড কোচ হাথুরুসিংহের অধীনে একটানা দুই সপ্তাহ কোচিং করবে। এরপর আগামী ২৪ কিংবা ২৫ আগস্ট এশিয়া কাপ খেলতে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা যাবে তারা।
এদিকে কেউ কোনো কথা পরিষ্কার করে না বললেও ভেতরের খবর এশিয়া কাপের প্রাথমিক দলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ নেই। বিসিবির কোনো শীর্ষ কর্মকর্তা ও টিম ম্যানেজমেন্টের কেউই এ স্পর্শকাতর বিষয়ে কোনোরকম মন্তব্য করতে রাজি নন। তবে এক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, এশিয়া কাপের প্রাথমিক দলে নেই রিয়াদ।
জানা গেছে, টিম ম্যানেজমেন্ট বিশেষ করে হেড কোচ চন্ডিকা হাথরুসিংহে রিয়াদের ব্যাপারে মোটেই উৎসাহী নন। ওই জায়গায় মানে মিডল ও লেট মিডল অর্ডারে অভিজ্ঞ রিয়াদের জায়গায় তরুণ ও সম্ভাবনাময় তাওহিদ হৃদয়, সৌম্য সরকার, শেখ মাহদি, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতদের সম্ভাবনা অনেক বেশি।
এই চারজনের মধ্যে তাওহিদ হৃদয় এরই মধ্যে নিজেকে মেলে ধরেছেন। আর শেখ মাহদি, সৌম্য ও মোসাদ্দেক তিনজনের বোলিং অপশনটা আছে। রিয়াদ এখন নিয়মিত বোলিংও করেন না। মোহামেডানের হয়ে এবারের ঢাকা লিগে হাতেগোনা কয়েকটি ম্যাচে বল করেছেন শুধু। কাজেই সব মিলিয়ে রিয়াদের দলে থাকার সম্ভাবনা খুব কম। সূত্র অনুযায়ী শূন্যের কোঠায়।
ওদিকে ২১-২২ জনের প্রাথমিক দলে তামিম ইকবালের ব্যাকআপ ওপেনার হিসেবে নাঈম শেখ বাকিদের চেয়ে এগিয়ে। পাশাপাশি তরুণ বাঁ-হাতি ওপেনার তানজিদ তামিম-এর প্রাথমিক দলে ডাক পাওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল। এছাড়া পেস বোলিং অপশনে নতুন বিকল্প হিসেবে আরেক তরুণ পেসার পেসার তানজিম সাকিবকেও দেখা যেতে পারে।
এছাড়া আফগানিস্তানের বিপক্ষে সর্বশেষ ওয়ানডে দল থেকে তামিম ছাড়া সবার থাকাও একরকম নিশ্চিত। আফগানদের সাথে রান না পেলেও কলম্বোয় এশিয়ান ইমার্জিং কাপে রান করে এশিয়া কাপের প্রাথমিক দলে নিজের অবস্থান অনেকটাই নিশ্চিত করেছেন নাইম শেখ।
তাহলে মিলিয়ে নিন এবারের এশিয়া কাপের প্রাথমিক দলটি হতে পারে এমন-
লিটন দাস, নাইম শেখ, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, আফিফ হোসেন ধ্রুব, তাওহিদ হৃদয়, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, এবাদত হোসেন, হাসান মাহমুদ, শরিফুল ইসলাম, তানজিদ তামিম, রাকিবুল হাসান, মাহমুদুল হাসান জয়, তানজিম সাকিব, জাকির হাসান, সৌম্য সরকার, মোসাদ্দেক হোসেন, শেখ মাহদি, সাইফ হাসান।